নয় পরিস্কারওয়ালা j

প্রতিদিন ঢাকা শহর পরিচ্ছন্ন করার  দায়িত্বে থাকে একঝাঁক পরিচ্ছন্নকর্মী। বাসা, কলকারখানা, রাস্তাসহ রাজধানী আনাচেকানাচে জমে থাকা ময়লা পরিস্কার করার দায়িত্বই থাকে তাদের। প্রতিদিন যারা শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখছে কেমন কাটছে তাদের দিন?। কেমন আছে তারা?। পজিটিভ থিংক কথা বলেছে বেশ কয়েকজন পরিচ্ছন্নকর্মীর সাথে তারা জানিয়েছেন তাদের জীবন যাপনের দৈনন্দিনের সমস্যা নিয়ে।

পরিচ্ছন্নকর্মী  মঈন উদ্দিনের বয়স ৩৭ বছর, কাজ করেন ২ ২ বছর ধরে। তিনি বলেন, এই ময়লা ২২ বছর ধরে ফালানোর কাজ করছি।  প্রথম যখন এ কাজে আসি তখন দুর্গন্ধ সহ বিভিন্ন সমস্যা হতো  দুই-এক গেলে আর সমস্যা হয় না ।  এখন সহ্য হয়ে গেছে । এখন মনে করেন এইটার মধ্যে খাইতে পারি এইটার মধ্যে সব কিছু করে পারি । তিনি বলেন ছোটবেলায় যখন ঢাকায় আসি  রাস্তায় রাস্তায় কাগজ টোকাইছি। আমার পরিবারের সবাই এখন এই পরিচ্ছন্নতার কাজ করে। মাসে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা বেতন পাই এটা দিয়েই সংসার চলে। পরিবারের সবাই একসাথে থাকায় সংসার চালানো কিছুটা কষ্টের হয়ে যায় ।

ময়লা ফালানো কাজ করতে গিয়ে কখনও বড় ধরণের অসুস্থতায় পরতে হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মঈন উদ্দিন বলেন,
এইটার কারনে আল্লাহর রহমতে কোনো কোনো রোগ হয় নাই , এমনিতে সর্দি কাশি ঠান্ডা জ্বর এগুলো তো হয়।

করোনার সময় আল্লাহর রহমতে কোনো কনো কিছুই হয় নাই , আমাদের কোনো জ্বর ও হয় নাই  আল্লাহর রহমত , কোনো সমস্যাই হয় নাই, আমরা টিকা দিয়ার সময় টিকা দিয়েছি , টিকা আমাদের দেয়া কর্তব্য এটা আমরা দিয়েছি, টিকার কার্ড আছে লগেই রাখি যদি কোনো সমস্যা হয় এই জন্য কার্ড রাখি যেন দেখাতে পারি।

তবে প্রথম হইছে ঐ যে ২ মাস , ঐ ২ মাস গন্ধ গ্যাসে শরীর ফুলে গেছে, পেট ফুলে গেছে , পাতলা পায়খানা হইছে । পরে আমরা গরীব মানুষ বুঝেন না, অল্প দামি কিছু ওষুধ খাইছি আল্লাহর রহমতে সেরে গেছে ।

মঈন উদ্দিনের আছে ২টি সন্তান, তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে জানতে চাইলে বলেন,  এই কাজ আমি বেশি দিন করতে চাই না আমার বাচ্চা কাচ্ছা এখন বড় হয়ে গেছে , আমার বাপে করছে দেখে এই কাম আমি করতেছি । ওদের পড়াশোনা করিয়ে বড় করমু।

এই কাজের মধ্যে জীবন নিয়ে সুখি কিনা জানতে চাইলে বলেন, হ্যা সুখী। তবে ময়লা ফালানো কাজ করি বলে মানুষ একটিু খারাপ চোখে দেখে তখন খুব খারাপ লাগে। অনেকে বকাবাজিও করে। তবে দু একজনে বুঝে আমরা ময়লা ফালানো কাজটা মানুষের সুবিধার জন্য করি। যারা বুঝে তারা চা পান খাওয়া, কিছু টাকা বকসিশও দেয়। এভাবেই চলি।

পজিটিভ থিংকের ক্যামেরা দেখে একজন পরিচ্ছন্নকর্মী বিষাদের সুরে  বলেন,  এইটা ফায়দা হবে কি না? আমাদের কষ্ট করে কোনো ফল নাই তো, আমাদের দুঃখ  আজকে কনো সুযোগ সুবিধা পাইলাম না এই জীবনে,  রোগ হয়ে যায়, কোনো রোগের চিকিৎসার টাকা পয়সা দেয় না কোনো সুযোগ সুবিধাই নাই,  কোনো ভাতা দেয় না, কোনো ভাতা নেই , কোনো কিছুই নাই। ঈদে কোনো বকশিশও পাই না ।

error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।