পাহাড়-ঝর্ণা, নদী-নালা, বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ কিছুই এখন চেনা যায় না। বাড়ি ঘর, রাস্তা বা বাজার এখন পানি থৈ থৈ। এইতো কদিন আগেই এখানে গরীব-ধনির বৈষম্যতায় একে অপরকে দূরে সরিয়ে দিতো… কিন্তু এখন—! সবাই যেন এক পাটে বসে চোখের জল ফেলছে। নাই বিদ্যুৎ…নাই রাতের ঝলমলে আলো… হাতের স্মার্ট ফোনটিও আর কাজে আসছে না। একটু উচুঁতে নির্মিত বাড়িগুলোতে রান্নার ব্যবস্থা থাকলেও সেই সুযোগ আর হয়ে ওঠেনি নিম্ন শ্রেণির মানুষগুলোর। অন্য দিকে প্রয়োজনীয় বাজার করতে গেলেও ৫০ টাকার নৌকা ভাড়া গুনতে হবে ১০ বা ২০ হাজার টাকা। তাহলে ১ কেজি চাউলের জন্য তাকে কত গুনতে হতে পারে? এ প্রশ্নের উত্তর কেবল তারাই দিতে পারবেন।
শুনতে অবাক মনে হলেও ১টা ৫ টাকার মোমবাতির দাম এখন সিলেটের মাটিতে ৫০০ টাকা। যেন এক নিরব আত্মচিৎকারে ভুগছে বন্যার্ত সিলেট-সুনামগঞ্জবাসী। তাদের এই অসহায়ত্ব মুহুর্তে আর্তমানবতার সেবায় দেশের অগনিত মানুষ এগিয়ে এসেছে। কেউ নগদ অর্থ, কেউ চিড়া-মুড়ি অথবা কেউ কলা-বিস্কুট দিয়ে তাদের ক্ষুধা নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছে।
অন্যান্যদের মত সিলেট জৈন্তাপুর এর হরিপুর এলাকায় বানভাসি মানুষের পাশে দাড়িঁয়েছেন ইসলামিক একটি সংগঠন। মানবিকতার হাত বাড়িয়ে বানভাসি মানুষের কষ্ট লাঘবে শুকনো খাবার, ঔষধ, নগদ অর্থ ও প্রয়োজনীয় দুর্যোগকালীন সামগ্রী দিয়ে দুঃসময়ে সিলেটবাসীর পাশে থাকার চেষ্টা করছেন। অপরদিকে একটি সামাজিক সংগঠন বাসমাহ ফাউন্ডেশন শুরু থেকেই বন্যাকবলিত এলাকায় প্রতিদিন শতশত প্যাকেট শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছে।
এই ভয়াবহ দুর্যোগের শুরু থেকেই সরকারি-বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। আরও আনন্দের বিষয় এইযে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের খ্যাতিমান কয়েকজন ব্যাক্তি নিজ উদ্যোগে বন্যার্তদের সাহায্যে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ২২ লাখ টাকার ত্রাণ সহযোগিতা করেছেন।
আরও পড়ুন : সুনামগঞ্জের বন্যার্ত এলাকায় ডাকাত আতঙ্ক, ভোর পর্যন্ত চলে পাহারা