FB IMG 1658052625446
ফাহিম সালেহকে তরুণ প্রজন্মের অনেকে চেনে না, না চেনাটা অস্বাভাবিক নয়। সে প্রচারবিমুখ ছিলেন। এড়িয়ে চলতেন মিডিয়া।
ফাহিম সালেহ হতে পারতো আমাদের মার্ক জাকারবার্গ কিংবা বিল গেটস। কিন্তু তার আগেই মাত্র ৩৩ বছর বয়সে নৃশংস হত্যাকান্ডে তাকে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হলো।
ছোট্ট করে জানাই বাংলার ইলন মাস্কখ্যাত আমাদের গর্ব ফাহিম সালেহ-র গল্প।

FB IMG 1658052600898

ফাহিমের দাদার বাড়ি চট্টগ্রাম, নানার বাড়ি নোয়াখালী। বাবা-মা সৌদি আরবে থাকার সুবাদে সেখানেই জন্ম হয় তার। বাবা ছিলেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। কাজ করতেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বখ্যাত আইবিএম কর্পোরেশনের এডভাইজার হিসেবে। ফাহিমের শৈশব-কৈশোর কেটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানেই পড়াশোনা। ছাত্র হিসেবে ছিলেন প্রচন্ড মেধাবী। নিউইয়র্কে একটি হাইস্কুলে পড়া অবস্থাতেই উইজ টিন নামক একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিলেন সেসময়।
পরে যুক্তরাষ্ট্রের বেন্টলি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগ থেকে গ্রাজুয়েশন করার পরপর উচ্চ বেতন নিউইয়র্কের বোস্টনের একটি কোম্পানিতে চাকরির অফার পেয়েও উদ্যোক্তা হওয়ার পথে হাঁটেন স্বপ্নবাজ ফাহিম।
বাংলাদেশের স্টার্টআপ ইন্ডাস্ট্রিটা যত বড়ো হয়েছে তার মধ্যে একটা বিশাল অবদান এই ফাহিম সালেহের। তিনি ২০১৪ সালে নিউইয়র্ক থেকে ঢাকায় এসে যৌথভাবে ‘পাঠাও অ্যাপ’ চালু করেন। যা বর্তমানে দেশের সর্ববৃহৎ রাইড শেয়ারিং অ্যাপ। কয়েক লাখ যুবকের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে এই রাইড শেয়ারিং। বাংলাদেশের পাঠাও ছাড়া নাইজেরিয়ায় ‘গোকান্ডা’ নামে আরেকটি রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম চালু করেন ফাহিম। পেশায় ওয়েবসাইট ডেভেলপার এই স্বপ্নবাজ ফাহিম অ্যাডভেঞ্চার ক্যাপিটাল গ্লোবাল নামক একটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানেরও উদ্যোক্তা ছিলেন।
২০১৮ সাল নাইজেরিয়ায় গোকাডা রাইড শেয়ারিং চালু করলে অল্পদিনে সংকটে পড়েন। কারণ, নাইজেরিয়ার সরকার মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ারিং নিষিদ্ধ করে। তবে সংকটে পড়ার আগে এক বছরেই গোকাডা হতে ৫৩ লাখ ডলার বা ৪০ কোটির বেশি টাকা আয় করেন ফাহিম। পরবর্তীতে যাত্রী পরিবহন নিষিদ্ধ হয়ে গেলে গোকাডা পার্সেল ডেলিভারি সার্ভিস চালু করে।
বাংলাদেশে ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টর এনেছে অল্প কয়েকটি স্টার্টআপ মাত্র, আর সেই ইনভেস্টরদের সাথে কানেক্ট করিয়ে অন্য স্টার্টআপগুলোর জন্য ফান্ডরেইজিংয়ের ব্যবস্থা করিয়েছে এই ফাহিম সালেহই।
১৩ জুলাই ২০২০ নিউইয়র্কের নিজ ফ্ল্যাটে নৃশংসভাবে খুন করে তার সহকারী এক কৃষাঙ্গ। এই মুহূর্তে নামটা মনে আসতাছে না। কী অপরাধে খুন করেছে ফাহিমকে?
তার সে সহকারী ফাহিমের সরলাপনায় প্রায় ৯০,০০০ হাজার ডলার আত্মসাৎ করে ফেলে। ফাহিম জেনে গিয়ে তাকে ক্ষমা করে দেয়, কিস্তিতে টাকাটা পরিশোধ করতে বলে। যেহেতু তার সাবেক সহকারী, তাই পুলিশের কাছে অপরাধের অভিযোগ জানায় নাই। এটাই তার জন্য কাল হয়েছে। সে সহকারী সুযোগ পেয়ে ফাহিমকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ইলেকট্রনিক করাতে কয়েক খন্ড করে ফেলে!
জোনাকিরা আলো জ্বেলে নিভে যায় তাড়াতাড়ি। আমাদের ফাহিমও ৩৩ বছরে আলো ছড়িয়ে নিভে গেল। এই ৩৩ বছরের ১৬ বছরই কেটেছে উদ্যোক্তা জীবন।
সবাই জানুক বাংলার স্বপ্নবাজ ফাহিমের গল্প
error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।