t2

টাঙ্গাইলের মধুপুরে ঈগল পরিবহনের একটি নৈশ্য কোচে যাত্রীবেশে ডাকাতি ও এক নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় আরও দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে মো. আউয়াল (৩০) এবং একই উপজেলার শিলাবহ পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাহেজের ছেলে নুরনবী (২৬)।

শুক্রবার (৫ আগস্ট) ভোরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর ও সোহাগপল্লী থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইলের জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মোহাম্মদ কায়সার।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) ভোরে টাঙ্গাইল শহরের নতুন বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ডাকাতির মূলহোতা রাজা মিয়াকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার তিনজনই মাদকাসক্ত।

এদিকে গ্রেফতার রাজা মিয়ার ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া তথ্য মতে অফিসার ইনচার্জ ডিবি (উত্তর), টাঙ্গাইল এর নেতৃত্বে ডিবি (উত্তর), টাঙ্গাইলের একাধিক চৌকস টিম নিরন্তর প্রচেষ্টার মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাতি ও গণধর্ষণ ঘটনার সাথে জড়িত অপর দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।

এসপি সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানিয়েছেন, ডাকাত চক্রটি আরও কোনো ডাকাতি কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছে কি না, তাদের দলের সদস্য সংখ্যা কত, তারা আর কী ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দিনগত রাতে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে ঈগল পরিবহনের একটি বাস ৩০-৩৫ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসার পথে এ ডাকাতি ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এরপরই অভিযানে নামে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাসটি সিরাজগঞ্জের একটি খাবার হোটেলে যাত্রা বিরতি করে। সেখান থেকে যাত্রা শুরুর পর তিন দফায় যাত্রীবেশে কয়েকজন ডাকাত বাসে ওঠে। পরে যাত্রীদের হাত-পা-চোখ বেঁধে মারধর ও সম্পদ লুটপাট চালায়। এসময় বাসে থাকা এক নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণ করেনডাকাত সদস্যরা। এরপর রুট পাল্টে রাত সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মধুপুরের রক্তিপাড়া জামে মসজিদ এলাকায় রাস্তার পাশের বালির ঢিবিতে পরিবহনটি উল্টে দিয়ে পালিয়ে যায় তারা। আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ওই সদস্যরা টানা তিন ঘণ্টা যাত্রীদের ওপর এমন ভয়াবহ অত্যাচার চালায় বলে জানা গেছে। পরে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা ওই বাসে থাকা যাত্রীদের উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে বুধবার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

এ ঘটনায় বাসটিতে থাকা হেকমত মিয়া নামের কুষ্টিয়ার এক যাত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করে মধুপুর থানায় বাস ডাকাতি ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন।

ডাকাতি ও গণধর্ষণের সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার ও লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধারের জন্য গ্রেফতারকৃত আসামিদের পুলিশ হেফাজতে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে। ঘটনায় জড়িত থাকা অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।