FB IMG 1657960545853
পৃথিবী ছাড়াও ব্রহ্মাণ্ডের অন্য কোথাও প্রাণের সম্ভাবনা রয়েছে—এ কৌতূহল মানুষের দীর্ঘদিনের। তা আরও বাড়িয়ে দিল জেমস ওয়েবের নয়া সন্ধান। বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ দিয়ে ব্রহ্মাণ্ডের অন্যত্র প্রাণ থাকলে তার খোঁজ করা সম্ভব হবে। তেমনই একটি জায়গার খোঁজ মিলেছে। যা পৃথিবীর থেকে এক হাজার আলোকবর্ষ দূরে। সেখানেও আছে এক সূর্য। আর তাকে ঘিরে প্রদক্ষিণ করছে দৈত্যাকার গ্যাসীয় পিণ্ড।
সৌরমণ্ডলে মঙ্গল গ্রহ এবং বৃহস্পতির উপগ্রহ ইউরোপায় জলের অস্তিত্ব মিলেছে। তবে প্রাণের খোঁজ পাওয়া যায়নি। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, পৃথিবীর মতো প্রাণের অনুকূল কোনও গ্রহ থাকতে পারে মহাবিশ্বে। এমন প্রায় ৩০ কোটি গ্রহ বাসযোগ্য হতে পারে। তা আরও স্পষ্ট হল জেমস ওয়েবের ছবিতে।
গত ২১ জুন জেমস ওয়েবের ‘নিয়ার-ইনফ্রারেড ইমেজার অ্যান্ড স্লিটলেস স্পেক্ট্রোগ্রাফ’-এর নজরে আসে ডব্লিউএএসপি-৯৬। ওই গ্রহে রয়েছে জল ও মেঘ। ধোঁয়াটে পরিবেশ।
নাসা জানিয়েছে,ডব্লিউএএসপি-৯৬ মিল্কি ওয়েরই এক এক্সোপ্ল্যানেট। সৌর জগতের বাইরে থাকা গ্রহকে বলে এক্সোপ্ল্যানেট। যা পৃথিবীর মতো কোনও এক নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে। এমন ৫ হাজার এক্সোপ্ল্যানেট রয়েছে।
পৃথিবী থেকে প্রায় ১১৫০ আলোকবর্ষ দূরে নক্ষত্রপুঞ্জে রয়েছে ডব্লিউএএসপি-৯৬ গ্রহ। এর ভর বৃহস্পতি গ্রহের অর্ধেকেরও কম। ব্যাস বৃহস্পতির চেয়ে ১.২ গুণ বেশি। তাপমাত্রা ৫৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গ্রহের সঙ্গে তার নক্ষত্রের দূরত্বও কম। প্রদক্ষিণ করতে সময় লাগে পৃথিবীর সাড়ে তিন দিন।
বায়ো সিগনেচার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপকে কাজে লাগিয়ে প্রাণের খোঁজ করছেন বিজ্ঞানীরা। কাজে লাগানো হচ্ছে বায়ো সিগনেচার প্রযুক্তি। যে কোনও জীবই হোক না কেন ছাপ ছেড়ে যায়। সেই ছাপই হল বায়ো সিগনেচার। পৃথিবী তৈরির সময় বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন ছিল না। তবে এককোষী জীব ছিল। ২৪০ কোটি বছরে তার বদল ঘটে। জন্ম নেয় শৈবাল। শৈবালই অক্সিজেন উৎপাদন শুরু করে। এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে অক্সিজেন। প্রাণের বিকাশে তা সহায়ক হয়। সমুদ্রে বেড়ে ওঠে প্রাণ। নক্ষত্রের আলো গ্রহে পড়লে দেখা যায় বায়ো সিগনেচার। পাতা যেমন সূর্যালোক থেকে লাল ও নীল রং শুষে নেয়। সেভাবেই আলোর নানা তরঙ্গকে আলাদা করে বুঝতে পারে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। এটি জল, অক্সিজেন, কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে চিহ্নিত করতে সক্ষম। ভিন্‌গ্রহের বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প, কার্বন ও অক্সিজেন, তাপমাত্রা ও গভীরতা মেপে নিতে পারে জেমস ওয়েব।
সূত্র: নাসা, সায়েন্স বি
error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।