Rakib
আপনারা প্রায় সবাই রানার নামে ইউটিউব চ্যানেল জেনে ও চিনে থাকবেন । এই ইউটিউবের পরিচালনায় রয়েছেন রাশেদুজ্জামান রাকিব । বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় ইউটিউবার । কিছু সিনেমার সংলাপ নিয়ে  আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে জায়গা করে নিয়েছেন। তবে একটি মজার বিষয় হলো তিনি বিভিন্ন সিনেমার সংলাপকে নিজের মতো করে নিয়ে সমালোচনা করলেও সে গুলো ট্রল নয়। সিনেমার খুঁটি-নাটি অসংগতি গুলো তুলে ধরাই তার উদ্দেশ্য। বিনোদনের মাধ্যমে  এসব তথ্য গুলো তুলে ধরেন।  বিভিন্ন  সিনেমার  সংলাপ গুলো নিয়ে দর্শকমহলে বেশ খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা পেয়েছেন।
বাংলাদেশের অন্যতম ইউটিউবারদের মধ্যে একজন রাশেদুজ্জামান রাকিব। সংক্ষেপে  আরএনএআর।  বাংলাদেশী সিনেমার যৌক্তিক আলোচনা ও সমালোচনার মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে বিনোদনধর্মী কন্টেন্ট তৈরি করে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন।

 

আরও পড়ুন : গল্প ভালো হলে যেকোনো চরিত্রে কাজ করতে চাই : অর্ষা

 

পর্দার বিভিন্ন মাধ্যমের  চরিত্র গুলো নিয়ে কখনো প্রসংশা, কখনো  যুক্তিসহ সমালোচনা এ যেন এক রুচিসম্মত দর্শকদের চাহিদা  বলার ভিন্ন কৌশল। একজন তরুণ ব্যতিক্রম  ভিডিও নির্মাতা রাশেদুজ্জামান রাকিব । সবাই তাকে আরএনএআর নামেই চেনেন ও জানেন।  পজিটিভ থিংকের ক্যামেরায় রাকিব বলেন,  তারঁ আরএনএআর এর রহস্য  বা পরিচয়, আর- তাঁর মায়ের নাম, এন-তে তারঁ ছোট ভাইয়ের নাম,  এ- তাঁর আব্বুর নাম ও এন-তে তাঁর  স্ত্রী  যুক্ত করে এবং নিজের নাম রাকিবের আর সংযুক্ত করে  নাম রেখেছেন আরএনএআর।
যদিও তিনি বাংলা সিনেমা নিয়ে  বিভিন্ন ভিডিও তৈরি করেন রাকিব । তাঁর  এই ভিডিওয়ের পিছনে রয়েছে শক্তিশালী অভিনয় কৌশল, কথা বলার ভঙ্গি ইত্যাদি বিষয় গুলো  আকৃষ্ট করে সকল  শ্রেণির  সিনেমা প্রেমী  মানুষদের । তাঁর চিন্তায় প্রকাশ পায়  দেশি-বিদেশি সিনেমার গল্পের কাহিনীর অসামঞ্জস্যতা বা  পার্থক্য । গল্পের সাথে চরিত্রের আবার চরিত্রের সাথে গল্পের সুনিপুণ কারিগরদের ।
নানা গল্প ও মজার আদলে বাংলা সিনেমা গভীর পর্যালোচনা  করে ইউটিউবে ভিডিও বানান । ভিডিওতে তাঁর ব্যতিক্রমী কথা বলার ভঙ্গি দর্শকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। লাখ লাখ মানুষ দেখেন ভিডিওগুলো। বিনোদনের পাশাপাশি ভিডিওতে সিনেমার তথ্য-উপাত্ত, কাহিনি আর যুক্তিরও কমতি থাকে না। সিনেমার গল্পের অসংগতি, কাহিনির নকল ধরিয়ে দেওয়া কিংবা অশালীন সংলাপ নিয়ে কাটাছেঁড়া যেমন চলে, তেমনি আয়নাবাজির মতো সফল ছবির প্রশংসা, গল্পের প্রয়োজনে আরিফিন শুভর পরিশ্রম কিংবা নায়করাজ রাজ্জাকের বর্ণাঢ্য জীবন নিয়ে তথ্যচিত্রও রয়েছে ইউটিউবের আরএনএআর  তথ্যচিত্রে।
সিনেমাপ্রেমী আরএনএআর জীবনটাই যেন একটা পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা । জীবনের অনেক চড়াই-উৎরাই, ঘটনা, উত্থান-পতনের সঙ্গী সিনেমা। ছোটবেলা থেকে  শখ ছিলো  সিনেমা দেখার। প্রায় ২০০৪–০৫ সাল দিকে যখন  শুক্রবারে বিটিভিই  একমাত্র ভরসা ছিলো সিনেমা দেখার । সে সিনেমার দেখার পর স্কুলে গিয়ে সেটির কাহিনি  বন্ধুদের ও সহপাঠীদের কাছে মজা করে বলতেন।
জানা যায়, সিনেমার গল্পগুলো বাড়তি রস জোগাড় করে সবাইকে শোনাতেন যাতে সবাই বাড়তি মজা পায়।  এ ভাবে তখন সবাই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেত।
শুরুটা ২০১৬ সালে দিকে আরএনএআর নামে প্রথম ইউটিউব চ্যানেল খুলেছিলেন তিনি। কয়েক মাসের মধ্যেই গ্রাহকসংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিলো  তবে  দুর্ভোগ্য বিষয় হচ্ছে যে,  হঠাৎ  তাঁর ইউটিউব চ্যানেলটি হ্যাকড হয়ে গেছে। তার পর আবার  ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে আরএনএআর নামে রাশেদুজ্জামান রাকিব  ইউটিউব চ্যানেলটি খুলেন। মোট ১৪৩টি ভিডিও রয়েছে চ্যানেলে। ভিডিওগুলো ৮ কোটি বারের বেশি দেখা হয়েছে। আর গ্রাহক ৮ লাখের বেশি। এভাবেই জনপ্রিয়তায় এগিয়ে যান তিনি।
একটি ভিডিওর জন্য ক্যামেরার সামনে আর পেছনে ৭০ থেকে ৮০ ঘণ্টা ব্যয়  করেন তিনি। তাঁর সাপ্তাহিক কর্মতালিকা সাজানো। ভিডিও প্রকাশের কাজ থেকে ছুটি নিয়ে পরিবারকে সময় দেন। এরপর আবারও শুরু করেন কর্মযজ্ঞ । যেকোনো একটি  বিষয় নির্ধারিত হয়ে গেলে তা নিয়ে দিনভর গবেষণা শুরু করেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো খাতায় বা কম্পিউটারে টুকে রাখেন। আর এভাবে দর্শকমহলে নতুন নতুন ভিভিও নিয়ে আসেন।
ব্যক্তিগত জীবনে রাশেদুজ্জামান রাকিব পড়াশোনা শেষ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান থেকে।  আর চিন্তা চেতনায় নতুন ধারা বজায় রেখে বেচে নিয়েছেন  এ পেশা। সুনাম কুড়িয়েছেন দর্শকমহলে।
জানা যায়, ক্যামেরার সামনে আসতে আগ্রহী নন তিনি। তবে অন্য কোনো পেশায়ও যেতে চান না; নিজেকে ক্যামেরার পেছনে থেকেই সিনেমা নিয়ে ভিডিও বানিয়ে দর্শকদের বিনোদন দিতে চান।
আর প্রতিটি জিনিসের উন্নতির জন্য আলোচনা-সমালোচনা দরকার। এটা না থাকলে উন্নতি সম্ভব নয়। যদি আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়, তাহলে এ দেশের রুপালি পর্দায় আবারও সুদিন ফিরে আসবে বলে আশাবাদী তিনি।
error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।