এক সময় স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকতা ও গণ যোগাযোগ বিভাগে পড়াশোনা করবেন। কিন্তু অভাবের তাড়নায় সংসারের হাল ধরতে এসএসসি পরিক্ষার আগেই বন্ধ করে দিতে হয় পড়ালেখা। নিজে স্বপ্ন পূরণ করতে না পারলেও ইচ্ছে ছিল ভাইদের পড়াবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তাও হলো না। একসময় বিয়ে করলেন, হলেন দুই সন্তানের বাবা। ভাবলেন নিজে যেহেতু স্বপ্ন পূরণ করতে পারেননি, ভাইদের দিয়েও হলো, এবার নিজ সন্তানরা বড়ো হলে তাদের পড়াবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সন্তানরা বড়ো হলো, তাদের আগ্রহে ভাটা পড়ছে! তারাও পারেননি বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে। ততদিনে তার বয়স ৫২ ছুঁই ছুঁই। ভাবলেন কেউ যেহেতু তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারেনি, নিজেই মাঝ বয়সে অরেকবার চেষ্টা চালাবেন। বাস্ এসএসসি, এইচএসসি শেষ করে নেমে পড়েন ঢাবির ভর্তিযুদ্ধে। পরীক্ষা দেন ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ‘ঘ’ ইউনিটের অধীনে। গতকাল (০৪ জুলাই) প্রকাশিত হলো রেজাল্ট, কিন্তু পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি তিনি। এর ফলে ঢাবিতে ভর্তির স্বপ্ন অধরাই রয়ে যায় ৫৫ বছর বয়সী অদম্য স্বপ্নবাজ বেলায়েতের।

গতকাল (০৪ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে দুপুর ১টায় ফল প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান।

প্রকাশিত ফলাফলে পাশের তালিকায় নাম দেখা যায়নি বেলায়েত শেখের। পরিক্ষায় তার রোল নম্বর ছিল ৫১২১২২৩। ১২০ নম্বরের মধ্যে তিনি ভর্তি পরীক্ষায় পেয়েছেন আট এবং মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জিপিএ’র ভিত্তিতে প্রাপ্ত নম্বরসহ মোট প্রাপ্ত নম্বর ২৬.০২। ঢাবিতে স্বপ্ন পূরণ না হলেও অন্যান্য জায়গায় চেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলে জানান তিনি। বেলায়েত বলেন, আমার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। সামনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করব। আমি আশাকরি যেকোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সুযোগ হবে।

উল্লেখ্য, এ বছর ‘ঘ’ ইউনিটে মোট ৭১ হাজার ২৬২ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে পাস করেছেন মাত্র ছয় হাজার ১১১ জন, যা মোট শিক্ষার্থীর ৮ দশমিক শতাংশ ৫৮। বাকি ৯১ দশমিক ৪২ শতাংশ শিক্ষার্থীই ফেল করেছেন। ‌‘ঘ’ ইউনিটে মোট আসন এক হাজার ৩৩৬টি।

error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।