Child Lebour
সামাজিক সুরক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিত করি, শিশুশ্রম বন্ধ করি’। এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ১২ জুন রবিবার পালন করা হবে বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। আইএলও, ইউনিসেফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় বেসরকারি সংস্থা দিবসটি উপলক্ষে বেশ কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচি পালনে এসব সংস্থার সঙ্গে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সমন্বয় করছে।
তবে করোনাপরবর্তী সময়ে দেশজুড়ে ক্রমেই বেড়েছে শিশুশ্রমের প্রকোপ। সরকারি নানা উদ্যোগে শিশুশ্রম কিছুটা কমে এলেও বন্ধ করা যাচ্ছে না কোনোভাবে। সম্প্রতি ৬ শিল্প খাতকে শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা করেছে সরকার। সেটি শিশুশ্রম বন্ধে কতটা কার্যকর হবে সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। খাতগুলো হলো- রেশম, ট্যানারি, সিরামিক, গ্লাস, জাহাজ শিল্প, রপ্তানিমুখী চামড়াজাত ও পাদুকা শিল্প।

 

আরও পড়ুন : রোববার রাজধানীতে বন্ধ থাকে যেসব এলাকার মার্কেট

 

সরকার ৩৮টি ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকা করেছে, যার মধ্যে গণপরিবহন অন্যতম। শিশুশ্রম নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, শিশুদের ছয় খাতের শ্রম থেকে মুক্ত করলেও শিশুরা শ্রমে জড়িয়ে পড়ছে ভিন্ন খাতে, যার প্রধান কারণ দরিদ্রতা।

 

child 1

ইউনিসেফ তাদের এক প্রতিবেদনে বলে, লাখ লাখ শিশুকে শ্রমে ঠেলে দিতে পারে কভিড-১৯। প্রতিবেদনটির বাস্তবরূপ যেন এখন দেশের অলিগলি আর পথ। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, এরই মধ্যে শ্রমে থাকা শিশুদের হয়তো আরও বেশি কর্মঘণ্টা কাজ করতে হচ্ছে বা তাদের আরও খারাপ পরিবেশে কাজ করতে হতে পারে। তাদের মধ্যে আরও বেশি সংখ্যক শিশু হয়তো ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে নিযুক্ত হতে বাধ্য হবে, যা তাদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মারাত্মক হুমকির কারণ হবে। বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি তোমো হোযুমি বলেন, সবচেয়ে অসহায় শিশুদের জীবন, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও ভবিষ্যতের ওপর কভিড-১৯ মহামারি বিশেষ নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। স্কুল বন্ধ ও পরিবারের আয় কমে যাওয়ায় অনেক শিশুর জন্য শ্রমে যুক্ত হওয়া এবং বাণিজ্যিকভাবে যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুরা যত বেশি সময় স্কুলের বাইরে থাকে, তাদের আবার স্কুলে ফেরার সম্ভাবনা ততটাই কমে যায়। আমাদের এখন শিশুদের শিক্ষা ও সুরক্ষার ওপর অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত এবং মহামারির সময়জুড়েই তা অব্যাহত রাখা উচিত। ইউনিসেফের প্রতিবেদনে শিশুশ্রম বৃদ্ধির ঝুঁকি মোকাবিলায় বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের সুপারিশ করা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে অধিকতর সমন্বিত সামাজিক সুরক্ষা, দরিদ্র পরিবারের জন্য সহজে ঋণ পাওয়ার সুযোগ, বড়দের মানসম্মত কাজের সুযোগ বৃদ্ধি, স্কুলের বেতন বাতিলসহ শিশুদের স্কুলে ফেরা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ, শ্রম পরিদর্শন ও আইন প্রয়োগে সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়গুলোও রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুশ্রমের মতো একটা অপরাধকে সংঘটিত করতে মানুষ বিভিন্নভাবে ভিন্ন অপরাধে জাড়াচ্ছে, যেটা সমাজের জন্য অভিশাপ। দ্রুত শিশুশ্রমের প্রতিকার করা না গেলে শ্রমেই হারিয়ে যাবে কোমলমতি শিশুদের শৈশব।
error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।