IMG 20220718 212508
বছর দুয়েক আগে করোনা ভাইরাস যখন পৃথিবীকে গ্রাস করে, তখন লকডাউনে ঘরবন্দি অবস্থায় বিষণ্নতায় ভুগছিলেন লাখ লাখ মানুষ। স্বপন আহমেদ তখন ভাবলেন এমন কিছু কনটেন্ট তৈরি করবেন, যা নিজেকে চিত্তবিনোদন যোগানোর পাশাপাশি অন্যদের জন্যও আনন্দের খোরাক হবে। এরপর একপর্যায়ে তিনি শুরু করলেন সচেতনতামূলক কনটেন্ট তৈরি। ইচ্ছাশক্তি আর এডিটিংয়ের দক্ষতায় দ্রুত অর্জন করলেন জনপ্রিয়তা।
বলছিলাম সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘মাসুদ রানা’ খ্যাত স্বপন আহমেদের কথা। স্বপন আহমেদ মূলত সমসাময়িক আলোচিত বিষয়গুলোর উপর নিজস্ব চিন্তাভঙ্গিতে ভিডিও তৈরি করে থাকেন। এডিটিংয়ের মাধ্যমে কখনো নায়ক সালমান খানের সাথে সিনেমার দৃশ্যে, কখনোবা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে মজার সাক্ষাৎকার, আবার কখনোবা মাসুদ রানা হয়ে প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানে হাজির হন আয়োজক আর বিচারকদের অসঙ্গতির প্রতিবাদ জানাতে।
প্রতিনিয়ত সোশ্যাল মিডিয়ায় তার এমন বিনোদনমূলক ভিডিও মানুষকে বিনোদন দিচ্ছে। ‘২০১৯ সালে মাসুদ রানা’— শিরোনামে একটি ভিডিও আপলোডের কয়েকঘণ্টায় ভাইরাল হয়ে যায়। ফলে অল্পসময়ে স্বপনও মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন মাসুদ রানা নামে।
স্বপন বলেন, ‘একটা শো ছিলো ‘কে হবে মাসুদ রানা’ নামে। সেখানে বিচারকদের আচার-আচরণ ক্ষুব্ধ করে সারাদেশের মানুষকে, তখন যে যার জায়গা থেকে তার প্রতিবাদ করেছে; যেহেতু আমি এডিটিং পারি, তখন আমিও এডিটিংয়ের মাধ্যমে প্রতিযোগি হিসেবে সেখানে হাজির হয়ে নিজস্ব ভঙ্গিতে এর প্রতিবাদ করি। অল্পসময়ে সে ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়।’
স্বপন শুরুর দিকে ভিএফএক্স এবং ওয়েব ডিজাইনের কাজ করতেন। তারপর গ্রিনস্ক্রিনে ধারণ করা দৃশ্যের ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তনের কাজ শেখার মাধ্যমে ২০১৯ সাল থেকে পুরোদমে ইউটিউবিং শুরু করেন। স্বপনের প্রতিটি ভিডিও অল্পসময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত তার তৈরি ভিডিওগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশিবার দেখা হয়েছে আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে তৈরি করা একটা ফান ভিডিও। যেটি পৃথিবীর অসংখ্য দেশে মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে শেয়ার হয়েছে কয়েক লক্ষ বার।
বর্তমানে ফেসবুক ও ইউটিউব মিলিয়ে স্বপনের অনুসারীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩৩ লাখ।
সমাজের অসঙ্গতি আর নেগেটিভ বিষয়গুলো নিয়েই কেন ভিডিও তৈরি করছেন -এমন প্রশ্নে স্বপন বলেন, ‘নেগেটিভ আর অসঙ্গতিগুলোতে সুযোগ থাকে পজিটিভ মেসেজ দেওয়ার, অর্থাৎ প্রতিবাদ করার এবং এগুলো মানুষ দ্রুত গ্রহণ করে। আর মূলত আমি প্রতিটি ভিডিওতে কোনো না কোনো পজিটিভ মেসেজ দিয়ে থাকি এই অসঙ্গতি পরিবর্তনের জন্য। যে কারণে মানুষও সহজে আমার ভিডিও গ্রহণ করছে।’
কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবের এই মেধাবী তরুণ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পড়াশোনা করছেন ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের তৃতীয় বর্ষে। ভবিষ্যতে ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবেই কাজ করতে চান তিনি।
error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।