FB IMG 1658168319271

শিশু-কিশোরদের ইলেকট্রনিক ডিভাইস আসক্তি হতে মুক্তির উপায়

সময় কাটছে এখন নিত্য নতুন ভার্চুয়াল জগতের রঙিন নেটে, হচ্ছে তৈরী অনুভুতিহীন অমানুষ মোবাইল, টিভি, গেইমের গেজেটে।

ঘরে বাইরে কমন দৃশ্য সবার হাতে মোবাইল, ব্যস্ত গেম আর নানা এপসে, ছোট থেকে বড় কেউ যেন বাদ নেই। এর থেকে উদ্ধারের উপায় কি?

স্ক্রিনটাইম কতটুকু স্বাভাবিক?

WHO এর মতে, ১৮ থেকে ২৪ মাসের নিচে কোন ডিভাইস, টিভি কিছুই দেয়া যাবে না, শুধু মাত্র ভিডিও চ্যাট ছাড়া; তাও তার নিকট আত্মীয়দের সাথে কথোপকথন হবে এজন্য ছাড় দেয়া যায়। এর বাইরে এদের কোনোভাবেই মোবাইল টিভি কম্পিউটার ব্যবহার করতে দেয়া যাবে না।

২ বছর থেকে ৫/৮ বছর পর্যন্ত দিনে গড়ে ১ ঘন্টা পর্যন্ত স্ক্রিনটাইমের অনুমতি দেয়া যাবে আর ৮ থেকে ১৮ বছর হলে তা বড়জোর ২ ঘন্টা।

কেন নিষেধ করা হয়?

১. বাচ্চার কথা বলতে শিখতে দেরী হয় ও বাধাগ্রস্ত হয়

২. পড়াশোনা শেখার ক্ষমতা হ্রাস পায়

৩. স্মরণশক্তি কমে যায়

৪. ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়

৫. মনোযোগ কমে যায়

৬. মেদ বৃদ্ধি পায়

৭. উগ্রআচরণ ও খিটখিটে হয়ে যায়

৮. কোন কাজে এনার্জি না পাওয়া, দূর্বলতা বৃদ্ধি পায়

৯. খারাপ আচরণগুলোকে আয়ত্ত করে ফেলে ও পরবর্তী সেগুলো স্বভাবে প্রকাশ পায়

স্ক্রিনটাইম কমানোর উপায়ঃ

১. প্রথম কাজই হচ্ছে আগে নিজেকে উদাহরণ হিসেবে তৈরি করুন, নিজে এর ব্যবহার কমান। বাচ্চাদের সামনে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল বের করবেন না।

২. একবারে সব বন্ধ না করে দিয়ে একটা নির্দিষ্ট দিন ঠিক করে তার আগে আস্তে আস্তে প্রতিদিন একটু একটু করে সময় কমিয়ে আনুন।

৩. আপনার কাজের অবসরে ওদের সময় দিন, একসাথে নিয়ে বসে টিভিতে গঠনমূলক ও বাচ্চাদের উপযোগী অনুষ্ঠান দেখুন, ওদের সাথে গল্প করুন। বুঝান কেন স্ক্রিনটাইম কমাতে চাচ্ছেন।
পারিবারিক সময় তৈরি করুন যেসময় একসাথে গল্প করা, খেলা বা খাবার একসাথে কাবেন বা সময় কাটাবেন।

৪. স্ক্রিন ফ্রি সময় ও জায়গা তৈরি করুন। মোবাইল টিভি প্রথমেই খাবার ঘর ও শোবার ঘর থেকে বের করে দিন। এমন জায়গায় রাখবেন যেখান থেকে ওদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারবেনা। খাবার ঘর ও শোবার ঘর গেজেট ফ্রি এলাকা ঘোষণা করুন ও খাবার সময়, ঘুমানোর সময় ও পারিবারিক সময়টুকু এসব মুক্ত রাখার চেষ্টা করুন।

৫. বাইরে নিয়ে যান ও বাইরে খেলার ও দৌড়ঝাঁপের সুযোগ করে দিন। বাইরে নিতে না পারলে ঘরে খেলার ব্যবস্থা করুন, গান নাচের আয়োজন করুন, গানবাজনায় উৎসাহিত করুন।

৬. বাসায় বিড়াল, খরগোশ বা পাখি পুষুন ও বাচ্চাদের দ্বায়িত্ব দিন তাদের দেখাশোনার। সময় কাটানোর পাশাপাশি এতে দ্বায়িত্ববোধও তৈরি হবে।

পরামর্শক: ডাঃ লুনা পারভীন
শিশু বিশেষজ্ঞ, বহির্বিভাগ
ঢাকা শিশু হাসপাতাল, শ্যামলি।

error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।