ctg
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বিএম কনটেইনার ডিপোতে ৪ জুন শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এরপর ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। বিকট শব্দে কম্পিত হয় ৫ কিলোমিটার জুড়ে, আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এলাকার মানুষ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রথমে একটি কনটেইনারে আগুন লেগেছিল। পরে আরও কয়েকটি কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। প্রথমে কেমিক্যাল কনটেইনার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রথমে বিএম কনটেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একটি কনটেইনারে রাসায়নিক থাকায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটনা ঘটে। এখন ক্রমেই বাড়ছে আহত ও নিহতের সংখ্যা।
সারারাত আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার পর ভোরে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
                 সারা রাত আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার পর ভোরে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিবেশ। আহত-নিহতদের স্বজনদের কান্নার রোল হাসপাতালজুড়ে। নিহতদের মধ্যে আছে, কারও বাবা, কারও ছেলে কিংবা কারও স্বামী ও নিকটাত্মীয়। দগ্ধদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ছাড়াও আশপাশের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দগ্ধ হয়ে নিহত ও আহদের মধ্যে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীও রয়েছেন। বিস্ফোরণের ফেসবুক লাইভ করতে গিয়ে নিখুঁজ রয়েছে এক শিক্ষার্থী। পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এক পুলিশ সদস্যের।

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি কে এম তানভীর সাংবাদিকদের বলেন, ইতোমধ্যে ৪০০ এর বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। ২২০০ বেডের এই হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক-নার্স নেই। এ কারণে যারা মেডিক্যালে পড়ছেন, মেডিক্যাল জ্ঞান আছে তারাও এসেছেন চিকিৎসকদের সহায়তা করতে। রোগীদের চিকিৎসায় সহযোগিতা করছেন তারা। এরপরও আমরা সেবা দিয়ে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, আহত ও দগ্ধদের মধ্যে আনসার সদস্য আছেন ৪৩ জন, পুলিশ সদস্য ১০ জন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মী আছেন সাত জন। এছাড়া ডিপোর শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ মিলে চার শতাধিক ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭ জন।
error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।