images 14
মেডিকেল সায়েন্স অনুযায়ী মানবদেহে মোট তেইশ জোড়া বা ছেচল্লিশটি ক্রোমোজম থাকে। যার মধ্যে বাইশ জোড়া তথা ছচল্লিশটি ক্রোমোজমকে অটোজম বলে আর বাকি এক জোড়া ক্রোমোজমকে সেক্স ক্রোমোজম বলে। এই একজোড়া সেক্স ক্রোমোজমই মানুষের লিঙ্গ নির্ধারণে মূখ্য ভূমিকা পালন করে। এই সেক্স ক্রোমোজম দুটি এক্স(X) এবং ওয়াই(Y) নামে পরিচিত।
নারীদের ডিপ্লয়েড কোষে দুটি সেক্স ক্রোমোজমই এক্স (X) ক্রোমোজম অর্থাৎ ডাবল এক্স (XX), অপরদিকে পুরুষদের ক্ষেত্রে দুটি সেক্স ক্রোমোজমের মধ্যে একটি এক্স (X) অপরটি ওয়াই (Y) ক্রোমোজোম অর্থাৎ এক্স-ওয়াই XY।
এখন মিয়োসিস কোষ বিভাজন যদি ঠিকভাবে সম্পন্ন হয় তাহলে সন্তান হয় ছেলে নয়তো মেয়ে হয়। কিন্তু কোষ বিভাজন ঠিকভাবে না হলে সন্তান ছেলে অথবা মেয়ে না হয়ে তৃতীয় লিঙ্গের হয়। সেক্ষেত্রে ঠিকভাবে বিভাজন না হওয়াই সেক্স ক্রোমোজম XX বা XY এর পরিবর্তে ত্রিপল এক্স (XXX) অথবা ডাবল এক্সওয়াই (XXY) এইরকম অস্বাভাবিক কোষের সৃষ্টি হয়।
এই তৃতীয় লিঙ্গের সন্তান জন্মের পর সচরাচর যে লক্ষণগুলো দেখা যায়— প্রথমত, শিশুর দেহে শুক্রাশয় এবং ডিম্বাশয় উভয়ই উপস্থিত থাকে। দ্বিতীয়ত, শিশুর দেহাকৃতি মেয়েদের মত কিন্তু স্ত্রী জননাঙ্গের পরিবর্তে পুং জননাঙ্গ উপস্থিত থাকে। তৃতীয়ত, শিশুর দেহাকৃতি ছেলেদের মত কিন্তু তার জননাঙ্গ অপূর্ণ থাকে।
তৃতীয় লিঙ্গের হয়ে জন্মানোর মানেই কিন্তু একটা সমস্যা নয়। গত এক যুগে চিকিৎসা বিজ্ঞানের যে উন্নতি হয়েছে তাতে চিকিৎসার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান খুব সহজেই করা যায়। সন্তান জন্মের পর যদি বোঝা যায় সন্তান মধ্যে  এ ধরনের সমস্যা আছে তাহলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সন্তানের লিঙ্গ (ছেলে না মেয়ে) নির্ধারণ করে এবং সে অনুযায়ী হরমোনজনিত চিকিৎসার মাধ্যমে তা স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা যাবে। আবার অনেকক্ষেত্রে সার্জারীর মাধ্যমেও এই সমস্যার সমাধান করা যায়।
error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।