tangail

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্ত বাসে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর ডাকাতি ও গণধর্ষণ মামলার মূল আসামী রাজা মিয়াকে গ্রেফতার করেছে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের (উত্তর) গোয়েন্দা বিভাগ। এসময় গ্রেফতারকৃতের কাছে থেকে বেশকিছু লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়।

টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশ রাজা মিয়া নামের ওই ব্যক্তিকে বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) ভোরে গ্রেপ্তার করে। তিনি কালিহাতী উপজেলার বল্লা গ্রামের বাসিন্দা। শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে ঈগল পরিবহনের একটি বাস নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। গভীর রাতে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর যাত্রীবেশী ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যাত্রীদের হাত, চোখ, মুখ বেঁধে ফেলে। যাত্রীদের মুঠোফোন, টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে। এ সময় ধর্ষণের ঘটনাও ঘটে। তিন ঘণ্টা ধরে চলে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা। এরপর মধুপুরে রাস্তার পাশে বাসটি খাদে পড়ে গেলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। খাদে পড়ে যাওয়ার পর আশপাশের লোকজন উদ্ধারে এগিয়ে আসে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তাঁদের সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য জানা যায়।

ডাকাতি ও গণধর্ষণ মামলার ঘটনাটি লোমহর্ষক এবং চাঞ্চল্যকর হওয়ায় অফিসার ইনচার্জ ডিবি (উত্তর), টাঙ্গাইল এর নেতৃত্বে ডাকাতি ও গণধর্ষণ ঘটনার রহস্য উঘাটন ও আসামী গ্রেফতার করার জন্য ডিবি (উত্তর), টাঙ্গাইলের একটি চৌকস টিম নিরন্তর প্রচেষ্টার মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে ডাকাতি ও গণধর্ষণ ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তির অবস্থান সনাক্ত পূর্বক আসামী রাজা মিয়াকে (৩২) গ্রেপ্তার করে।

আসামী রাজা মিয়া সহ ডাকাতি ও গণধর্ষণের সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার ও বাস যাত্রীদের নিকট হতে লুন্ঠিত হওয়া মালামাল উদ্ধার করার জন্য অভিযান পরিচালনা করার লক্ষ্যে সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মধুপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা জয়নাল আবেদিন জানান, খবর পাওয়ার পর তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। প্রথমে মনে করেছিলেন সাধারণ দুর্ঘটনা। যাওয়ার পর দেখেন জানালা দিয়ে উঁকি দেওয়া অনেকের মুখ–হাত বাঁধা। সবাই আতঙ্কিত। এ সময় যাত্রীদের কাছে জানতে পারেন বাসে ডাকাতি হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে। এ সময় তাঁরা আহত দুজন ও ধর্ষণের শিকার এক নারীকে উদ্ধার করে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মধুপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মুরাদ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছে। পরে তাঁকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া বাসের চালক ও সুপারভাইজারকে হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাঁদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন জানান, ধর্ষণের শিকার বাসের নারী যাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে।

error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।