srilanka

আন্তর্জাতিক: শ্রীলঙ্কার বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে আজ বুধবার পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন দেশটির এমপিরা। আজ সকাল ১০টায় দেশটির পার্লামেন্টের অধিবেশন বসবে এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবে।

এদিকে প্রেসিডেন্ট পদে লড়ছেন অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে, ক্ষমতাসীন দলের দুল্লাস আলাহাপেরুমা ও বামপন্থি ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার দলের অনুরা কুমারা দিসানায়েক। শেষ মুহূর্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বিরোধী দলের প্রার্থী সাজিথ প্রেমাদাসা। তার সরে দাঁড়ানোয় অনেক হিসাবই পাল্টে গেছে। প্রার্থী তিনজন হলেও মূলত লড়াই হবে রনিলের সঙ্গে দুল্লাসের।

অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট রনিল নির্বাচন জিততে গতকাল মধ্যরাত পর্যন্ত টেলিফোনে ও ব্যক্তিগত আলোচনার মাধ্যমে এমপিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করেছেন। বেশ কয়েকজন এমপি তাকে সমর্থন দেবেন বলে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। বুধবার এই খবর দিয়েছে শ্রীলঙ্কান সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর অনলাইন।

সংবাদমাধ্যমটি জানায়, গতকাল মধ্যরাত পর্যন্ত রনিল বেশ কয়েকজন এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন। এর মধ্যে বিরোধী দলীয় এমপিরাও রয়েছেন। রনিল তাদেরকে নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন এবং দেশকে চলমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তোরণের দিকে নিয়ে যাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এর আগে দুল্লাস আলাহাপেরুমাকে সমর্থন দেওয়ার ব্যাপারে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের তরফ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল। এখন সেসব দলের এমপিরা রনিলের দেওয়া অর্থনৈতিক পরিকল্পনা এবং নিরাপত্তা নিশ্চয়তার পর তাকে সমর্থন দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

অন্যদিকে দুল্লাসও এই নির্বাচনী দৌড়ে ব্যাপক কর্মতৎপরতা চালিয়েছে যাচ্ছেন। সঙ্গে আছেন তার প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী সাজিথ প্রেমাদাসা। এই দুই নেতা গত সন্ধ্যায়ও সরকার দলীয় এমপি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জি এল পেইরিসকে সঙ্গে নিয়ে তামিল এমপিদের সমর্থন পেতে তামিল ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তামিল এমপিরা দুল্লাস ও সাজিথের কাছে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেছেন এবং বলেছেন, যদি এই দুইজন তাদের এই দাবিগুলোর সঙ্গে একমত হয় তবেই তারা দুল্লাসকে সমর্থন দেবেন।

তামিল ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স সূত্রে জানা যায়, তাদের ওই দাবি দাওয়ার মধ্যে রয়েছে অবিলম্বে সকল রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দেওয়া এবং শ্রীলঙ্কান সরকারকে অবশ্যই ইউএনএইচআরসির জেনেভা রেজ্যুলেশনের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়া, নিখোঁজ ব্যক্তিদের ব্যাপারে পুনরায় তদন্ত শুরু করা এবং তামিলদের জাতীয় ইস্যুগুলো সমাধানে প্রক্রিয়া শুরু করার দাবিও জানায় তারা। দুল্লাস এবং সাজিথ তাদের এই দাবিগুলো পূরণে রাজি হয়েছেন।

যদিও সাজিথ নিজের দল সামাজি জানা বালাবউইগেয়ায়ার (এসজেবি) নেতাদের তোপের মুখে আছেন। কারণ দলের অনেক এমপি প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন থেকে তার সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ। যেমন তার দলের নেতা ফিল্ড মার্শাল শরৎ ফনসেকা সাজিথের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যদি তিনি জেতার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী না হন তবে তাকে (ফনসেকা) দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া উচিত ছিল। গত সন্ধ্যায় দলের কিছু এমপিও দুল্লাসকে সমর্থন দেওয়ার দলীয় সিদ্ধান্তের বিপরীতে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

এদিকে ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ারের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী অনুরা কুমারা দিসানায়েকও গতকাল ব্যাপক প্রচার চালিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিজয়ী হলে তিনি মন্ত্রিপরিষদের পরিসর ছোট করে ১০ সদস্যে নামিয়ে আনবেন এবং দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে বিদেশি রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সমর্থন চাইবেন, প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতা কমিয়ে আনবেন এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে পুনরায় উদ্যোগ নেবেন। যদিও গত রাত পর্যন্ত বিজয়ী হওয়ার জন্য তিনি অল্প সংখ্যক এমপিদের সমর্থনই পেয়েছেন।

error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।