loead shedding

জাতীয়: ডিজেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন স্থগিত করে আগামীকাল থেকে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ে যাচ্ছে দেশ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী, মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সিনিয়র সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্র বলছে, সরকারি-বেসরকারি অফিস ভার্চুয়ালি করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি অফিসের সময় এক থেকে দুই ঘণ্টা কমিয়ে আনার চিন্তাও করা হচ্ছে। তবে এটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

বৈঠকে উপস্থিত তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী জানান, এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের অংশ হিসেবে মসজিদে এয়ার কন্ডিশনার বা এসি ব্যবহার বন্ধ থাকবে।

প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, দিনে এক থেকে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং থাকবে। আর রাত ৮টার পর দোকান বন্ধ থাকবে। এছাড়া সপ্তাহে একটি পেট্রোল পাম্প বন্ধ থাকবেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, এর আগে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী সম্প্রতি বলেছিলেন, দেশে বিদ্যুতের লোড শেডিং আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলমান থাকতে পারে। দেশজুড়ে লোড শেডিং নিয়ন্ত্রণে বিদ্যুতের চাহিদা কমাতে চায় সরকার। সে ক্ষেত্রে অফিস-আদালতের কর্মঘণ্টা কমিয়ে ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে। পাশাপাশি হোম অফিস করারও চিন্তা করা হচ্ছে।

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী আরো বলেন, ‘সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গ্রিডে সাড়ে ১৪ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত চাহিদা হতে পারে। সেখান থেকে কতটা কমাতে পারি সেই চিন্তা করা হচ্ছে। আমরা সাশ্রয়ী হলে হয়তো চাহিদা সাড়ে ১২ হাজার মেগাওয়াটে নামিয়ে আনতে পারব। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে এসির ব্যবহার ২৫-এর নিচে রাখা, মসজিদে এসির ব্যবহার কমাতে হবে এবং বিয়েসহ সব অনুষ্ঠান ৭টার মধ্যে শেষ করতে হবে। দোকানপাটগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বন্ধ করলে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে, তখন বিদ্যুতের চাহিদা কমে আসবে। ’

প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘জ্বালানি সংকটের কারণে এই মুহূর্তে বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে দুই হাজার মেগাওয়াটের মতো। আমরা যদি বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে পারি তাহলে ঘাটতি ৫০০ মেগাওয়াটে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। ’

বিশ্ববাজারে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকায় খোলাবাজার থেকে এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত বন্ধ রেখেছে সরকার। এলএনজির দাম না কমা পর্যন্ত দেশীয় গ্যাস থেকেই চাহিদা পূরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ফলে দেশে গ্যাসের সরবরাহ কমে গেছে। গ্যাস সংকটে বেশ কিছু গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে সরবরাহ কমায় চলতি মাসে লোড শেডিং শুরু হয় দেশজুড়ে। যদিও চাহিদা কমে যাওয়ায় ঈদের ছুটিতে লোড শেডিং কিছুটা কমেছে। কিন্তু চলতি সপ্তাহ থেকেই পুরোদমে কলকারখানা চালু হলে আবার লোড শেডিং শুরু হবে।

পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা বলছেন, গত জুনের শেষ সপ্তাহে খোলাবাজার থেকে এলএনজি কিনতে প্রতি ইউনিট (এমএমবিটিইউ) খরচ হয়েছিল প্রায় ২৫ ডলার। সেটি এখন হয়ে গেছে প্রায় ৪০ ডলার। এ কারণেই সরকার খোলাবাজার থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ রেখেছে। এ অবস্থায় জাতীয় গ্রিডে যে পরিমাণ গ্যাস ঘাটতি হচ্ছে, তা দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে জোগান দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ জন্য বেশ কয়েকটি কূপ ওয়ার্কওভার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।