Satkania

সাতকানিয়া! শব্দটি শুনলেই বোঝা যায়, এর সাথে সাতের কোন বিশেষণ জড়িয়ে আছে। কানিয়া শব্দটি কখনো কখনো আনন্দদায়ক, সক্রিয়, উপযুক্ত বা আধুনিক অর্থে ব্যবহার হলেও সাতকানিয়া শব্দে মূলত ভূমি পরিমাপের একক কানি শব্দকে উদ্দ্যেশ্য করেছে। সাতকানিয়ার প্রাচীন গ্রন্থ্য থেকে জানা যায়, ব্রিটিশ শাসনামলে প্রশাসনিক ও বিচার কাজের সুবিধার্থে এখানে আদালত ভবন স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় বর্তমানে অবস্থিত সাতকানিয়া-বাঁশখালী আদালত ভবনের নামে জনৈক পেঠান নামক এক জমিদার ৭ কানি তথা ২৮০ শতক ভূমি তৎকালিন সরকারকে দান করেছিলেন। তখন থেকে মানুষের মুখে প্রথমে ৭ কানির এলাকা এবং পরে ধীরে ধীরে সাতকানিয়া শব্দে রুপ পায়। সেসময় শুধু আদালত প্রাঙ্গণকে উদ্দেশ্য হলেও পরে সাতকানিয়া নামটি একটি গ্রাম হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। ১৯১৭ সালে সাতকানিয়ায় থানা প্রতিষ্ঠত হলে নামটি প্রশাসনিক ভাবে সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়ে  এবং ১৯৮৩ সালে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের স্বার্থে সাতকানিয়া থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়। বর্তমানে ১টি পৌরসভা, ১৭টি ইউনিয়ন, ৭৫টি গ্রাম ও ৭৩টি মৌজার সমন্বয়ে সাতকানিয়া উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

প্রশাসনিক সাতকানিয়ার আয়তন মোট ২৮২.৪০ বর্গকিমি। যার সম্পূর্ণ এলাকা সাতকানিয়া থানার আওতাধীন। চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের প্রধান অভিভাবক ডিআইজি নুরে আলম মিনা আজ থেকে ৭ বছর পূর্বে যখন চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করেছিলেন সে সময়ই মাত্র তিন বছরে চট্টগ্রাম জেলার প্রতিটি থানা, তদন্তকেন্দ্র, ফাঁড়ি ক্যাম্পে স্বল্প সময়ে পুলিশি সেবা নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় লজিস্টিক, মাল্টিপারপাস মিলনায়তন, সুসজ্জিত ভাণ্ডার, সুপেয় পানি সরবরাহসহ বহু উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছেন। এখন তিনিই চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলার পুলিশের প্রধান অভিভাকের দায়িত্বে উপনীত হয়েছেন। তার নির্দেশিত পথে এখন চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপারের দায়িত্বে আসীন রয়েছেন এস এম শফিউল্লাহ্ বিপিএম। সাতকানিয়া থানার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিনি পরোক্ষ্য ও প্রত্যাক্ষ্য ভাবে থানার অফিসার ইনচার্জের মাধ্যমে সাতকানিয়াবাসীর সকল আইনি সেবা নিশ্চিত করে চলেছেন! উপজেলাবাসীর জন্য সাতকানিয়া থানা পুলিশের সেবার ধরন ও উপজেলার মানুষের নানা কর্মকান্ড, শিক্ষা, উন্নয়ন ও জীবনমানের বাস্তবিক আলোকচিত্র নিয়েই পজিটিভ থিংকের আজকের আয়োজন সবুজ সংকেত “সাতকানিয়া”

 

 

সাতকানিয়া উপজেলা চট্টগ্রাম জেলা সদর থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পাহাড়, নদী, সমভুমি প্রকৃতির অপরূপ একটি জনপদ। পাহাড়, জলপ্রপাত, বনভূমি এই উপজেলাকে করে তুলেছে অপূর্ব রূপময়। যেন প্রকৃতির অপার লীলাক্ষেত্র রূপসী সাতকানিয়া। উপজেলার উত্তর সীমানা দিয়ে একে বেকে বয়ে চলা সাঙ্গু নদী কোথাও উন্মত্ত আবার কোথাও বা শান্ত। অদ্ভুত সুন্দর এ পাহাড়ী নদীকে মারমা উপজাতিরা তাদের ভাষায় রেগ্রীইং খ্যং’ অর্থাৎ ’স্বচ্ছ নদী’ নামে ডাকে। সাতকানিয়ার মানুষের জীবন–জীবিকার সাথে সাঙ্গু নদী ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিশেষ করে সাতকানিয়ার কৃষিতে সাঙ্গু নদীর প্রভাব অনস্বীকার্য। এছাড়া উপজেলার মাঝ সিমানা দিয়ে দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়ে সাঙ্গু নদীর সাথে মিলিত হয়েছে ছোট নদী ডলু বা টংকাবতী। এ নদীটি সাতকানিয়া পৌরসভার সামিয়ার পাড়া হয়ে শহরের পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। সাতকানিয়া মূলত একটি কৃষি প্রধান জনপদ। ধান, আলু, মরিচ, বেগুন ও টমেটো এখানকার প্রধান অর্থকরি ফসল। তবে বর্তমানে হুমকির মূখে পড়েছে সাতকানিয়ার কৃষি জমি। প্রতিবছর শীতের শুরুতে আমন ধান কাটার পর থেকে বর্ষাকাল শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত একশ্রেণির মাটি ব্যবসায়ী গরিব কৃষক ও জমির মালিকদের টাকার লোভ দেখিয়ে আবাদি জমির মাটি কিনে নেয়। জমির মালিকরা টপ সয়েল বিক্রির কুফল সম্পর্কে না জানার কারণে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা না করেই নামেমাত্র মূল্যে মাটি বিক্রি করে দেয়। ফলে একদিকে দিন দিন কমে যাচ্ছে কৃষি জমিগুলোর উর্বরাশক্তি অপরদিকে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। অভিজ্ঞদের মতে, জমিতে ফসল উত্পাদনের উপযোগী মাটি হলো জমির উপরের অংশ। আর একবার টপ সয়েল কেটে নিলে তা পূরণ হতে সময় লাগে ১৫-২০ বছর। তাই জমি মালিকদের এ সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরী। কৃষির পাশাপাশি সাতকানিয়ার মানুষ বিবিধ ব্যবসা ও শিল্প কারখানার সাথে জড়িত।

তন্মধ্যে লোহাগড়ার  বৃহৎ শিল্পকারখানাগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত নোমান গ্রুপ টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক প্রস্তুতকরণ,  বিপণন ও বাজারজাত করার মাধ্যমে বাংলাদেশের অন্যতম একটি বস্ত্রশিল্প প্রতিষ্ঠান গ্রুপ হিসেবে দেশের রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছে। উল্লেখ্য যে, নোমান গ্রুপ প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোঃ নূরুল ইসলামের তত্তাবধায়নে ২ দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের সর্বোচ্চ রপ্তানিকারক হিসেবে নির্বাচিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় নোমান গ্রুপ জাতীয় রপ্তানি ট্রফি, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রপ্তানি ট্রফি অর্জন করেছে। এ ছাড়াও জাতীয় অর্থনীতিতে অনন্য অবদান রাখায় উক্ত গ্রুপ এর পরিচালকবৃন্দ ২০০৭ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সিইপি-রপ্তানী নির্বাচিত হয়ে আসছে।

এসব মাইলফলক অর্জন করা নোমান গ্রুপের প্রধান অঙ্গপ্রতিষ্ঠান সমূহ হলোঃ

Zaber & Zubair Fabrics Limited.

Noman Terry Towel Mills Limited এবং

Nice Synthetic Yarn Mills Limited

Noman Weaving Mills Ltd

এ গ্রুপের অধীনে প্রায় ৩২ টি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ফ্যাক্টরিগুলোতে ৭০ হাজারেরও বেশি কর্মীকে নিয়োগ দিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড়ো নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম স্থান দখল করে আছে তারা।

এতে সাতকানিয়া- লোহাগড়াসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বহু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়াও এই উপজেলায় রয়েছে সর্বমোট ২৭২টি ক্ষুদ্রশিল্প প্রতিষ্ঠান যা শহর কেন্দ্রিক গড়ে উঠেছে। আর ১৭টি ইউনিয়ন জুড়ে রয়েছে ৩৫২৫টি কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠান। তবে বর্তমানে সাতকানিয়ার মানুষের মধ্যে খামারী উদ্যোক্তা হওয়ার প্রবণতা বেশি। উল্লেখ্য যে, এ উপজেলাটি চট্টগ্রাম জেলার ব্যবসাকেন্দ্র হিসেবে সুপরিচিত। ব্যবসার দিক দিয়ে বাংলাদেশের যেকোন অঞ্চল থেকে এ অঞ্চলের মানুষ এগিয়ে থাকতে পারবে, সেই মনোবল এখানকার সকলের মধ্যেই বসবাস করে। সেই সাথে তাদের রয়েছে প্রায় তিনশত বছরের ঐতিহ্যের সংস্কৃতি, যার নাম কুস্তি বা বলীখেলা। সাতকানিয়ার মাদার্শা ইউনিয়নে প্রতিবছর বাংলা সনের ০৭ই বৈশাখে এই বিশেষ খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। ইতিহাস থেকে পাওয়া যায়, প্রচণ্ড দৈহিক শক্তির অধিকারী চট্টগ্রামের মল্ল পরিবারের সুঠামদেহী সাহসী পুরুষরাই এই বলীখেলার প্রধান আকর্ষণ ও বলীখেলা আয়োজনের মূল প্রেরণা ছিলো। এ নগর সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য তুলে ধরেন সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ইয়াছির আরাফাত।

 

সবুজ-শ্যামলে ঘেরা, দুটি সচ্ছ নদী বেষ্টিত, পাহাড়, খাল-বিলসহ হাজার বছরের ঐতিহ্যের ধারক বাহক সাতকানিয়া উপজেলা। শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও রাজনৈতিক ভাবে সারাদেশ জুড়ে রয়েছে এ সাতকানিয়ার খ্যাতি। বিশ্বের বেশীর ভাগ দেশে ব্যবসা অঙ্গনকে বাতিয়ে রাখা এই সাতকানিয়া উপজেলার মানুষ সব দিক দিয়ে এগিয়ে গেলেও সময় উপযোগী উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এ জনপদের অনেক এলাকায়। চরতী, খাগরিয়া, নলুয়া, কাঞ্চনা, আমিলাইশ, এওচিয়া মাদার্শা, ঢেমশা, পশ্চিম ঢেমশা, কেঁওচিয়া, কালিয়াইশ, ধর্মপুর, বাজালিয়া, পুরানগড়, ছদাহা , সাতকানিয়া ও সোনাকানিয়া ইউনিয়নসমুহের বেশ কয়েকটি এলাকার মানুষ এখনো চরম দূর্ভোগের মধ্যে জীবন পাড় করছে। তার মধ্যে একটি অবহেলিত জনপদের নাম হরিণতোয়া। ছদাহা ও কেঁওচিয়ার কিছু এলাকা নিয়ে এ জনপদটি গঠিত। একটি ব্রিজের অভাবে এখানকার কয়েক হাজার জনসাধারণকে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কৃষিনির্ভর এ এলাকার জনসাধারণ নিজ উদ্যোগে হাঙ্গর খালের উপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে আসছে বছরের পর বছর। তাছাড়া প্রতিবছর এ উপজেলার অনেক গ্রাম ভয়াবহ বন্যার স্বীকার হয় । অন্যদিকে উপজেলার কেরানীহাট-বান্দরবান সড়কের বাইতুল ইজ্জত বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টারের দক্ষিণ পাশের সীমানা ঘেঁষে বয়ে গেছে হাঙ্গর খাল। খালের অন্য পাশে হরিণতোয়া এলাকার অবস্থান। এই এলাকার উত্তর-দক্ষিণ ও পশ্চিম সীমানায় হাঙ্গর খাল আর পূর্বে রয়েছে পাহাড়। এ জনপদে বসবাস করে প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবারের কয়েক হাজার মানুষ। কৃষিনির্ভর এই এলাকার অধিকাংশ মানুষ কৃষক। তাদের অধিকাংশই কৃষি কাজের উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে। চিকিৎসার জন্য নেই কোনো স্বাস্থ্য কেন্দ্র। বিজিবির সহযোগিতায় একটি বেসরকারি স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সাতকানিয়া উপজেলার একটি উল্লেখযোগ্য স্থান হলো কেরানীহাট। কেরানিহাট মাছ বাজারে কাদা পানির মাঝে একদিনে কোটি টাকার মাছের ব্যবসা হয়। কিন্তু ময়লা পানিতে ভরে থাকে পুরো বাজার। আর সেখানেই পানি মাড়িয়ে চলছে মাছের কেনাবেচা। ফলে যেমন ভোগান্তিতে পড়ছে মানুষ তেমনি ছড়াচ্ছে রোগ জীবানু।

এখানে প্রতিদিন চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী, বাঁশখালি সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রাকে করে কার্প, দেশি প্রজাতিসহ সামুদ্রিক মাছ আসে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে মাছের বেচাকেনা। সাপ্তাহে প্রতি বুধবার ও রবিবার  অর্ধকোটি টাকার মাছের ব্যবসার এ স্থানটির আধুনিক ব্যবস্থাপনাসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন খুবই জরুরী।

উল্লেখ্য যে সাতকানিয়া উপজেলার অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও দাপ্তরিক সেবা-পরিসেবায় কোন বিঘ্নতা নেই। সরকারী-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, সকল দিকেই সম্মৃদ্ধি এসেছে।  তবে উপজেলার চার লক্ষাধিক জনসংখ্যার জন্য রয়েছে মাত্র ৩১ শয্যা বিশিষ্ট একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কম্প্লেক্স। ইউনিয়ন ভিত্তিক রয়েছে আরও ২৪টি উপস্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র ও ১টি দাতব্য চিকিৎসালয় অন্যদিকে বেসরকারিভাবে গড়ে উঠেছে ৪টি হাসপাতাল। সাতকানিয়ার শিক্ষার মানও যথেষ্ট উন্নত। রয়েছে ৫টি কলেজসহ ২৭৫টি সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

সাতকানিয়া উপজেলার আইন শৃংখলার মান স্বাভাবিক রাখতে সাতকানিয়া থানার পাশাপাশি রয়েছে একটি তদন্তকেন্দ্র ও একটি পুলিশ ক্যাম্প। অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ইয়াছির আরাফাতের তত্বাবধানে তদন্তকেন্দ্র ও পুলিশক্যাম্পের মোট ২৪জন জনবলসহ সাতকানিয়া থানার সর্বমোট জনবল এখন শতাধিক।

“সাতকানিয়া’’ প্রকৃতির নানা রঙ্গে সজ্জিত একটি রুপালি নগরী। এ নগরের গ্রামাঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভিষন সুন্দর। এর মধ্যে মাদার্শা ইউনিয়নের পাহারী এলাকার সৌন্দর্য আরও বৈচিত্রময়। সবুজ ঘাসে বিস্তৃর্ণ মাঠের ফাকে ফাকে ছোট ছোট পাহার টিলাগুলো দেখলে মনে নীল গগনের মেঘগুলো এইতো বুঝি মিসেছে ওখানে। এসব দেখতে বৈকালিন আবহাওয়ায় অনেক মানুষের ভীর হয় এ এলাকায়। তাছাড়া প্রাচীন নিদর্শনাদি উপভোগের মত অনেকগুলো পুরাকৃর্তি রয়েছে সাতকানিয়ায়। এরমধ্যে প্রায় পাচ শত বছরের প্রাচীন দারোগা মসজিদ ও ডেপুটি মসজিদ, সাতশত বছরের প্রাচীন মূর্তি সংবলিত মুদ্রা ও ঠাকুর দীঘি ও কোতওয়াল দীঘি, বাজালিয়া গ্রামের বোমং হাট গির্জা, ঢেমশা’র শিবমন্দির ও প্রায় সাড়ে তিনশত বছরের পুরোনো আকবরবাড়ী জামে মসজিদ অন্যতম। এছাড়া বিশেষ স্থান হিসেবে সাতকানিয়ার পরিচিতি দখল করেছে মির্জাখীল দরবার শরীফ, উপজেলা শিশু পার্ক, কেঁওচিয়া বন গবেষণা প্রকল্প, দরবারে আলিয়া গারাংগিয়া, সাঙ্গু নদীর পাড় ও বৈতরণী-শীলঘাটার পাহাড়ী এলাকা, মাহালিয়া জলাশয়, সত্যপীরের দরগাহ, ন্যাচারাল পার্ক এবং তালতল নলুয়া রোড।

উল্লেখ্য, সাতকানিয়া উপজেলা চরতি ইউনিয়নে রয়েছে সাঙ্গু নদী বেষ্টিত একটি রূপসী দ্বীপ। এই দ্বীপের আদি নাম ‘শহর বিবির চর’। তবে বর্তমানে এটি ‘দ্বীপ চরতি’ নামে ব্যাপক পরিচিত। ৯ দশমিক ১৫ বর্গমাইল জুড়ে রয়েছে প্রকৃতির বিশাল লীলাক্ষেত্র।

error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।