Sonatola Thana

দেশের উত্তর সীমানা থেকে বয়ে আসা যমুনার শ্রোত বগুড়া জেলার যে উপজেলা সীমানাকে সর্ব প্রথম স্পর্শ করেছে সেটিই সোনাতলা উপজেলা। এটি বগুড়া জেলা শহর হতে উত্তর-পূর্ব দিকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে, জেলার সীমান্তবর্তী একটি উপজেলা। সোনাতলা উপজেলার উত্তরে গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে গাবতলী ও সারিয়াকান্দি উপজেলা, পূর্বে যমুনা নদী এবং পশ্চিমে শিবগঞ্জ ও গাবতলী উপজেলা। সোনাতলা উপজেলা মানচিত্রের মোট আয়তন ১৫৬.৭৬ বর্গ কি.মি.। প্রশাসনিক সোনাতলা থানা গঠিত হয় ১৯৮১ সালে। এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। পৌরসভা সীমানার গড়ফতেপুর মৌজায় ৩.১৪ একর জায়গা নিয়ে ১৯৯৫ সালে নির্মিত দ্বিতল ভবনে সোনাতলা থানার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অত্র থানায় মঞ্জুরীকৃত পুলিশ পরিদর্শক ০২ জন  এসআই ১০ জন, এএসআই পুরুষ ও মহিলা মোট ০৮ জন ও কনস্টেবল পুরুষ ৩৮ জন। মোট ৫৮জন জনবলের সমন্বয়ে সম্পূর্ণ উপজেলার নিরাপত্তা ও শান্তি শৃংখলা রক্ষায় প্রদানে অগ্রণী ভুমিকা পালন করছেন থানার অফিসার ইন্চার্জ মোঃ সৈকত হাসান। রাজশাহী রেঞ্জের প্রধান অভিভাবকের যুগপোগি পদক্ষেপ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সোনাতলা থানার অফিসার ইনচার্জকে সরাসরি তদারকি করছেন বগুড়া জেলার মান্যবর পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী। আজকের সবুজ সংকেত পর্বটি সাজানো হয়েছে, সেসব উর্ধ্বতন নির্দেশনা বাস্তবায়ন ও থানা পুলিশের কার্যক্রমসহ সোনাতলা উপজেলার সকল বিষয়াদি নিয়ে।

 

 

সবুজ শ্যামল প্রান্তর, রাশি রাশি বৃক্ষরাজি শোভিত ছোট ছোট বসতি! বাংলার চিরচেনা প্রকৃতি আর পল্লীর অফুরন্ত মায়ারূপ যেন সবটুকুই মিশে আছে বগুড়া জেলার ছোট্ট একটি প্রশাসনিক জনপদ সোনাতলায়। উপজেলাটি একটি পৌরসভা, ৭টি ইউনিয়ন ও ১০১টি মৌজার সমন্বয়ে গঠিত। এটি বগুড়া-১ নির্বাচনি এলাকার অন্তর্ভূক্ত। এ জনপদে বসবাস করে প্রায় দুই লক্ষ্য মানুষ। যাদের সিংহভাগই কৃষক। তবে যমুনার চর ঘেষে গড়ে ওঠা জনপদের মানুষ নদীতে মাছ ধরে জীবিকা আহরণ করে। বর্তমানে এলাকা জুড়ে প্রচুর খামারি উদ্যোক্তা গড়ে উঠেছে। যা স্থানীয় বেকারত্ব সমস্যা সমাধানে অনন্য অবদান রাখছে।জনসংখ্যার অন্য একটি অংশ বিবিধ ব্যবসা, দিনমজুর ও ছোট যানবাহন চালানোর মাধ্যমে সংসারের হাল ধরে আছে।

সোনাতলা যমুনা নদীবাহিত একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। যমুনা ছাড়াও এ উপজেলার মধ্যভাগ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বাঙ্গালী নদী। এটি গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থানা থেকে প্রবাহিত হয়ে সোনাতলা থানাস্থ বিসুর পাড়া ও বিশ্বনাথপুর মৌজাদ্বয় দিয়ে ছড়িয়ে পড়ে যথাক্রমে কামারপাড়া, রংবার পাড়া, নামাজখালি, শিকারপাড়ায় এসে ২ ভাগে বিভক্ত হয়েছে। আর যমুনা নদীটি বগুড়া জেলার সোনাতলা উপজেলার টেকানী চুকাইনগর ইউনিয়নের জানতিয়ার পাড়ায় অনুপ্রবেশ করে খাবুলিয়া, চুকাইনগর, মোহনপুর, সোরালিয়া দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

 

সোনাতলা থানা স্বাধীনতা পরবর্তী গঠিত থানা অঞ্চল হলেও এটি একটি ঐতিহাসিক ভূখন্ড। এশিয়ার মহাদেশের মধ্যে শুধুমাত্র এ ভূ-খন্ডেই রয়েছে ঐতিহাসিক পারুল বৃক্ষ। গাছটি এখন শতবর্ষী সময়ে পৌছেছে। সরকারি নাজির আখতার কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ নুরুল হুদা এটি কলেজের সামনে রোপন করেছিলেন। সোনাতলা উপজেলা বর্তমানে একটি শিক্ষাবান্ধব নগরী। প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ এখন শিক্ষার আলোয় আলোকিত।

উপজেলাটি যোগাযোগ ব্যবস্থার দিক থেকেও প্রশংসিত। উপজেলার উপর দিয়ে চলমান রয়েছে  রেল সংযোগ। রয়েছে একটি রেল স্টেশন। ১৯৭১ সালের ২৮ এপ্রিল পাকবাহিনী এই রেলস্টেশন সংলগ্ন বাজারে অগ্নিসংযোগ করে এবং ৩ জনকে গুলি করে হত্যা করেছিলো। হয়তো তাদের সেই রক্তের দামেই আজ সোনাতলা স্বাধীন বাংলাদেশের একটি গৌরবান্বিত অংশ।

সোনাতলা উপজেলা থেকে রেল যোগাযোগের পাশাপাশি সড়ক এবং জলপথে দেশের অন্যান্য জেলায় খুব সহজে ভ্রমণ করা যায়। ফলে এ অঞ্চলে উৎপাদিত কাঁচা মরিচ, পাট ও সবজি ও মাছ সহ অন্যান্য ব্যবসায়ে সহজ লভ্যতা রয়েছে।

error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।