w
জীবন যুদ্ধে পথে নেমেছে দুই খালতো ভাই। মনে আছে লালিত স্বপ্ন। আছে সমাজ পরিবর্তনের ইচ্ছে। তবে বাস্তবতা এতটাই কঠিন ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই এমন পরিস্থিতিই এখন তাদের। বাবা থাকলেও দেয় না বাবার পরিচয়। যে বয়সে হাতে থাকার কথা ছিল স্কুলের বই সে বয়সে কাধে সংসার। তাদের স্বপ্নগুলো কি ডানা মেলে উড়তে পারবে না?

ভোর থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত পথে পরে থাকা ভাঙারি কুড়ায় শিশু সূর্য । প্রতিদিনের মতো বের হয়েছে ভাঙারি কুড়াতে, দেখা মিলে রাস্তায়; কথা হয় তার জীবনযাপন নিয়ে। পজিটিভ থিংকের ক্যামেরায় সূর্য বলেন, সারা দিন ভাঙারি কুড়িয়ে রাতে গিয়ে রায়ের বাজার বিক্রি করবো। প্রতিদিন ভাঙারি কুড়িয়ে আয় হয় দুই থেকে তিন টাকা।
সূর্য কেন এই বয়সে জীবন যুদ্ধে নেমেছে তার কাছে জানতে চাইলে জানায়, বাবা প্রতিদিন বাসায় বসে নেশা করতো তাই বাবাকে ছেড়ে দিয়েছে মা। এখন মা ও ছোট বোনকে নিয়ে খেয়ে পরে বেঁচে থাকেতেই কাজে নেমেছি। থাকতে হয় বাসা ভাড়া নিয়ে, মাসে ভাড়া দিতে হয় ৩ হাজার টাকা। এখনও দুই মাসের ঘর ভাড়া বাকী আছে।
মায়ের শ্বাস কষ্ট থাকায় কিছু করতে পারে না, পুরো সংসারের হাল ধরতেই পথে নেমেছে সূর্য। মায়ের সুস্থতা বেশি থাকায় প্রায় নিতে হয় হাসপাতালে। ভাঙা কুড়িয়ে না পেলে মানুষের কাছে হাত পাততে বাধ্য হয় সূর্য।
সূর্য পাশের সাথে দেখা যায় তার খালাতো ভাই শাওনকে। তার জীবন যাপন সম্পর্কে জানতে চাইলে ছোট্ট শাওন বলেন, আমার বাবা আরেকটা বিয়ে করেছে, আমার মাকে আর পছন্দ হয় না, ভাল্লাগে না। নেশা করতো আগে, আমার মাকে প্রায়ই মারতো। ছোট্ট শাওনের ইচ্ছা পুলিশ হওয়ার। কেন পুলিশ হওয়ার ইচ্ছা জানতে চাইলে জানায় পুলিশ হলে যারা নেশা করে তাদের ধরে সোজা জেলে ভরে দেওয়া যায়। সূর্যের কোনো কিছু হওয়ার ইচ্ছে না থাকলেও জানায় সুখী সে, সুখী হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বলে ‘কাজ কাম করতে পারি, মায়ের সেবা করতে পারি, খেলাধুলা করতে পারি।’
ভাঙারি কুড়াতে বের হওয়া এই শিশুরা জানান, ভাঙারি বিক্রি করে যা টাকা পাই; কিছু জমাই আর কিছু দিয়ে বাজার করি। এই শিশুরা আরও জানায়, দিন শেষে সব টাকা তুলে দেই মায়ের হাতে; এরপর মা যদি দশ বিশ টাকা দেয় তাহলে কিছু কিনে খাই ।
error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।