রিক্সা ব্যবসায়ী

কিভাবে একজন নারী রিকশা ব্যবসায়ী সফল ব্যবসায়ী হয়ে উঠলেন

রাজধানীজুড়ে রিকশার বহর। রিকশার সংখ্যা কত বলা কঠিন। তবে এই রিকশাকে ঘিরে গড়ে উঠে রাজধানীর লাখো পরিবারের স্বপ্ন। রিকশার প্যাডেলের ওপর তাদের আয়। আর এ আয় দিয়ে চলে তাদের সংসার। খাওয়া, পড়ালেখা, চিকিৎসা সবই একটি রিকশাকে ঘিরে। একজন রিকশা ব্যবসায়ী প্রতি রিকশা প্রতিদিন ১০০ টাকা ভাড়ায় চালাতে দেন। এভাবে গড়ে ১০ থেকে ৫০টি পর্যন্ত রিকশা আছে, ঢাকায় অসংখ্য রিকশা ভাড়া দেয়া ব্যবসায়ীদের কাছে। আর তেমনই এক নারি রিকশা ব্যবসায়ীর সাথে কথা হয় আমাদের। তিনি জানান তার এই ব্যবসায়ে সফল হয়ে উঠের পেছনের গল্প।

কিভাবে এই ব্যবসায়ে যাত্রা শুরু?

রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় অসংখ্য রিকশা ভাড়া দেয়া ব্যবসায়ী রয়েছে। সবার কাছেই গড়ে ১০ থেকে শুরু করে ১০০ টি রিকশা পর্যন্ত রয়েছে। সবাই হয়তো পুরুষ কিন্তু আমরা দেখা পাই একজন ৫০ বছরের অধিক বয়সী মহিলা রিকশা ব্যবসায়ীর সাথে। তিনি জানান, মাত্র ৪ টি রিকশা নিয়ে তার রিকশা ব্যবসা শুরু করেন। যার টাকা টা তিনি জোগাড় করেছিলেন মানুষের বাসা বাড়িতে কাজ করে। দেখতে দেখতে আজ তার ২৪টি রিকশা। আর তিনি সেই আয় দিয়ে চালান তার পরিবার সাথে কিছু টাকা জমাও রাখেন এই ব্যবসায়ী।

সফলতার গল্প।

এই নারী রিকশা ব্যবসায়ীর আজ সফলতার পেছনে রয়েছে তার কঠোর পরিশ্রম ও ধৈর্য। আজ থেকে ১৫ বছর আগে তার স্বামী মারা যায়। ৪ মেয়ে ১ ছেলের পরিবার নিয়ে চলা তার অনেক কষ্টের ছিল। কিন্তু তাকে সেই কঠিন মুহুর্তটিও দমাতে পারেনি। তিনি তখন শুরু করেন বিভিন্ন কাজ করা। সেই কাজের টাকা জমিয়ে কিনেন ৪ টি রিকশা তারপর সেগুলো ভাড়া দিতে শুরু করেন। বর্তমানে তিনি এই ব্যবসায়ে একজন সফল উদ্দ্যগতা। ৩ মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেও কামাই করে। সব কিছু মিলিয়ে তিনি আজ একজন সফল ব্যবসায়ী। এক পর্যায়ে আমরা তাকে জিজ্ঞেস করি ‘আপনি কি আপনার এখনকার জীবন নিয়ে সুখি?’ তিনি হেসে আমাদের উত্তর দেন হ্যাঁ তিনি অনেক সুখি। যতদিন শক্তি আছে তিনি পরিশ্রম করেই যাবেন। এবং কোন কিছুই তাকে দমাতে পারবে না। তার আর কোন আফসোস নেই। এটাই সফলতার আনন্দ। কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায় আপনাকে পৌছে দেবে সফলতার চরম শিখড়ে।

কিন্তু কখনও কি মনে হয়েছে এই রিকশার আবিষ্কার কোঁথায় হয়েছে?

কোন ভিনদেশী যদি বাংলাদেশে বিশেষ করে ঢাকা শহরে পা রাখেন তাহলে যে বিষয়টি তার প্রথমেই চোখে পড়বে সেটা হল তিন চাকার বাহন রিকশা। মানব-চালিত মানববাহী এই বাহনটি বাংলাদেশের বাইরে আর কোন দেশেই এতো পরিমাণে নেই। এজন্যই হয়তো ঢাকাকে রিকশার নগরী বলেন অনেকে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, শুধুমাত্র ঢাকায় বৈধ অবৈধ মিলে প্রায় ১৫ লাখ রিকশা চলাচল করছে। আর পুরো দেশে কি পরিমাণ রিকশা চলছে সেটার সঠিক কোন পরিসংখ্যান নেই। এই বিপুল পরিমাণ রিকশার ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভর করে আছে দেশটির এক বিশাল জনগোষ্ঠী। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের ২০১৫ সালের প্রকাশনা অনুযায়ী, ঢাকার ৪০ শতাংশ মানুষ নিয়মিত চলাচলের ক্ষেত্রে রিকশার ওপর নির্ভরশীল।

অথচ এই রিকশার উদ্ভব বাংলাদেশে হয়নি। হয়েছে জাপানে। বেশিরভাগ গবেষণা তাই বলছে। আবার কোন কোন গবেষকদের মতে এই রিকশা তৈরি করেছেন মার্কিনীরা। রিকশা আবিষ্কারের সঠিক ইতিহাস নিয়ে এমন অনেক মতভেদ আছে।

বাংলাদেশে যে প্যাডেল দেয়া সাইকেল রিকশার প্রচলন সেটা সিঙ্গাপুর থেকে এসেছে বলে ইতিহাসবিদ ও গবেষক মুনতাসির মামুনের স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী ঢাকা বইটিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।