oc d

সারাদেশ: ঢাকা রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় থানার ওসিদের শুক্রবার জুমার নামাজের আগে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। ইতোমধ্যে বেশকিছু বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। থানার ওসিদের এমন কর্মকান্ডকে অনেকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং সমাজ পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মত দিয়েছেন। আবার অনেকে সমালোচনাও করেছেন।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ও জনসাধারণের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে সম্প্রতি পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমানের উদ্যোগে এই মসজিদভিত্তিক সচেতনতামূলক বক্তব্য কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ঢাকা রেঞ্জের ৯৬টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাবৃন্দ বিভিন্ন মসজিদে শুক্রবার জুমার নামাজের আগে জঙ্গিবাদ ও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে বক্তব্য দিয়ে এবং মুসল্লিদের খোঁজ খবর নিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ডিআইজি হাবিবুর রহমানের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন মুসল্লিরা।

মসজিদে নববীতে অবস্থান করে মহানবী (সা.) দ্বীনের আহকাম ও রাষ্ট্র পরিচালনার বিধান কার্যকর করতেন। তাঁর যুগেই মসজিদকেন্দ্রিক রাষ্ট্র ও সমাজের গোড়াপত্তন হয়েছে। বাংলাদেশ যেহেতু একটি মুসলিম দেশ এবং আমাদের রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলাম, মসজিদ সেখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। মসজিদ শুধু নামাজ ও ইবাদতের স্থানই নয়, বরং মুসলমানদের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্রও বটে। মানুষ যাতে করে বর্ণ, ধর্ম ও জাতিভেদ ত্যাগ করে সমাজের বিভিন্ন গোত্রের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহবস্থান করতে পারে সে জন্য মসজিদ রাখতে পারে এক বিরাট ভূমিকা।

রাসূল সা: এবং খেলাফয়ে রাশেদার যুগে যে এলাকায় মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সে এলাকায়ই ইনসাফ বাস্তবতা পেয়েছে। সমাজের হতদরিদ্র মানুষ নিজেদের আশ্রয় খুঁজে পেয়েছে। এতিম ও অসহায় শিশুরা মসজিদের মুসল্লিদের মধ্যে তাদের নতুন অভিভাবক খুঁজে পেয়েছে। মসজিদের মুসল্লিরাও এতিমদের আপন সন্তানের মতো বরণ করে নিয়েছেন। যেখানেই মসজিদ হয়েছে সেখানেই বেকার যুবক ও হতাশাগ্রস্ত মানুষ নতুন স্বপ্ন দেখার সুযোগ পেয়েছে। কেননা তখন মসজিদ ছিল সমাজের সব কল্যাণমূলক কাজের কেন্দ্রবিন্দু। মসজিদ মানুষের আত্মশুদ্ধিমূলক কর্মসূচির পাশাপাশি জাগতিক সমস্যা সমাধানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত। কালক্রমে মুসলিমদের নানাবিধ অবক্ষয়ের সাথে সাথে মসজিদের বহুমাত্রিক কল্যাণকর ভূমিকা স্তিমিত হয়ে গেছে। মসজিদ তার আপন মহিমা হারিয়ে শুধু ‘নামাজঘর’এর মধ্যে সীমিত হয়ে পড়েছে।

থানার ওসিদের মসজিদে বক্তব্য দেওয়া নিয়ে সমালোচকদের বক্তব্য­ ‘মসজিদে বসে দুনিয়াবি কথা বলা যাবে না।’ তাদের কথা যথার্থ। কিন্তু মানুষের কল্যাণের কথা বলা, শিশু-কিশোরদের মানবিক উন্নয়নের কথা বলা অবশ্যই দুনিয়াবি কথা নয়। বরং সুনিশ্চিত করেই এগুলো ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত।

যেসব এলাকার থানার ওসিরা মসজিদ ভিত্তিক সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন, সেইসব এলাকায় অপরাধ প্রবণতা কমতে শুরু করেছে। মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি মানবিক পুলিশ হওয়ার লক্ষে এক ধাপ এগিয়ে গিয়েছেন ওইসব পুলিশ কর্মকর্তা। মানুষের খুব কাছে গিয়ে খোঁজ খবর নেওয়ার তাদেরকে আপন করে নিয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। সুন্দর সমাজ গঠনে এমন জনবান্ধব কার্যক্রম সহায়ক হবে বলে মনে করছেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেষার মানুষ।

error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।