থানা

করিমগঞ্জ উপজেলা

বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার অন্তর্গত একটি করিমগঞ্জ উপজেলা। অপরূপ সৌন্দর্যের সমতল ভূমিতে সর্পিল নদী বেষ্টনে পলল অঞ্চলের এক গভীর ঐতিহ্যের বিস্তৃত উর্বর ভূমি অঞ্চল করিমগঞ্জ। যা বাংলার বারো ভূইয়া প্রধান ঈশা খাঁর দ্বিতীয় রাজধানী ঐতিহাসিক জঙ্গলবাড়ি নামে পরিচিত ছিল।
থানা
ইতিহাস পর্যালোচনায়, বাংলার বারভূঁইয়ার মধ্যে করিমদাদ মূসাজাঁই নামে একজনের  নাম জানা যায়। তবে তিনি অত্র এলাকায় বসতি স্থাপন করেছিলেন কি-না তা জানা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে করিমদাদ মূসাজাই ছাড়াও এ এলাকায় সম্পৃক্ত আর যে দুজন করিমের নাম রয়েছে, তন্মধ্যে একজন বৌলাই সাহেব বাড়ীর প্রতিষ্ঠাতা মোগল প্রতিনিধি শায়েখ আল আব্দুল করিম ও অন্যজন  সি.এস. রেকর্ডে তালুক করিম খাঁ।তিনি আনুমানিক ১৬২৫ সালে এ অঞ্চলে আগমন করেন।
ধারনা করা হয় জমিদারী আমলে করিমগঞ্জ বাজারটি বৌলাই জমিদার বাড়ীর অধীনে ছিল। ফলে এটি বৌলাই বাড়ীর পূর্ব পুরুষ শায়েখ আল আব্দুল করিম এর নাম থেকে করিমগঞ্জ নামকরণ হয়েছে।এরই আরেকটি গ্রহণযোগ্য মতামত হলো, স্বাধীনচেতা জমিদার নেতা বীর ঈশা খাঁর বিদ্রোহ মোগল সম্রাটকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলেছিল। ফলে বিদ্রোহ দমনের জন্য মোগল নৌ সেনাপতি, বৌলাই সাহেব বাড়ীর প্রতিষ্ঠাতা মীরে বহর আল শায়খ আব্দুল করিম এঁর নামানুসারেই এ অঞ্চল করিমগঞ্জ নামে পরিচিতি লাভ করে।দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়ে ১৯০৯-১০ সালের কোন এক সময়, প্রথম করিমগঞ্জ এলাকায় থানা স্থাপন করা হয়। তারপর থেকে করিমগঞ্জ নামটি আরও ব্যাপকতা লাভ করে।পরবর্তী ১৯৮৩ সালে করিমগঞ্জ একটি মান উন্নিত থানায় আত্মপ্রকাশ করে। এবং ২০০৩ সালের ৫ মে ৭.৮৫ বর্গ কি.মি আয়তন নিয়ে করিমগঞ্জ পৌরসভার স্বীকৃতি লাভ করে।করিমগঞ্জ উপজেলার মাটিতে ইতিহাসের সাক্ষি হয়ে দাড়িয়ে আছে, প্রাচীণ স্থাপনা ঐতিহাসিক ঈশা খাঁর জঙ্গলবাড়ি দুর্গ।

করিমগঞ্জ উপজেলার অন্যদিকে কৃষক আন্দোলন, স্বদেশী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতাযুদ্ধ ইত্যাদিতে করিমগঞ্জের বীর সন্তানদের অবদান চিরকালই লিপিবদ্ধ থাকবে করিমগঞ্জ এর ইতিহাসে। যেমনি ভাবে স্বরনীয় হয়ে রয়েছে বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল এটিএম হায়দারবীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা  ক্যাপ্টেন সিতারা বেগম , দ্বীজবংশী দাস, বীরঙ্গনা সখিনা, কমর উদ্দিন হোসাইন, মুন্সী আজিম উদ্দিন এর সমৃদ্ধ ইতিহাস।ব্রহ্মপুত্র নদের বন্ধন সূত্রে এবং স্রোতবাহিত পলি দিয়ে গড়ে উঠেছে এর গ্রামাঞ্চল। অপরদিকে শাখা নদী ও উপ নদীর বেষ্টনে গড়ে উঠেছে সরল ভাগ্যান্বেষী, মৎস্যজীবী, শরণার্থী ও আদিবাসীদের মিশ্রিত জন সমাজ।
নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত এ উপজেলা শহরটি তুলনামূলক বেশি ঘন বসতিপূর্ণ হলেও বলা যায় তাদের পারস্পারিক সম্পর্ক দৃষ্টান্তমূলক। প্রায় সমগ্র অঞ্চলই এক শান্ত পরিবেশের প্রতিক।২০০.৫২ বর্গ কি.মি আয়তনের এ উপজেলায় বর্তমানে বসবাস করছে সাড়ে তিন লক্ষ মানুষ। তাদের জীবন মান উন্নয়নে কাজ করছে উপজেলার সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে একাধিক ব্যাংক সহ অসংখ্যা এনজিও সংস্থা। রয়েছে মানুষের স্বাস্থ্য সেবার জন্য ১টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ নানা বিভাগের প্রায় ৪০টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র।শিক্ষা ব্যবস্থায় রয়েছে ক‌রিমগঞ্জ সরকারি মহা‌বিদ্যালয়, জংগলবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় সহ সুনামখ্যাত বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।মোট ১১ টি ইউনিয়ন, ৮৫টি মৌজা ও ১৯৬টি গ্রাম নিয়ে গঠিত করিমগঞ্জ উপজেলা ।

gif maker হাওর অদ্যুসিত করিমগঞ্জের প্রধান অর্থনীতি কৃষিকেই বলা যায়। এখানে রবি মৌসুমে প্রচুর শাক সবজি উৎপাদিত হয় এবং এ অঞ্চলের লাল টমেটো স্থানীয় চাহিদা পুরন করে দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করে আসছে। তবে বর্তমানে বিভিন্ন কুঠির শিল্পের আধিক্য লক্ষনীয়। রয়েছে নকশী কাথার মত কিছু হস্তশিল্প ও বিভিন্ন ধরনে খামার ব্যবসায়ী।দিগন্ত জুড়ে সবুজ গাছ আর সমতল ভূমিতে নির্মিত এক একটি ঘর যেন কাগজে আকানো ছবির মত সুন্দর।অন্যদিকে বিল প্রান্তরের বালিখলা এলাকার পিচ ঢালাই সড়কের দুপাশ যেন নীল পানির সমুদ্রের আভাস।শীতল বাতাসে পানির ঢেউয়ে মুহুর্তেই হারিয়ে যায় দূরে ডিঙ্গি নৌকা।অপরুপ এমন পরিবেশের স্বাদ নিতে এখানে আসেন, স্থানীয়সহ শহর অঞ্চলের বহু মানুষ।

কিন্তু কখনো কখনো এমন পরিবেশও ক্ষান্ত হয়ে যায়, হাওর অঞ্চলীয় বিশেষ কিছু অপরাধ সংগঠিত হওয়ার কারণে।তাই এখানকার ভ্রমন পিপাসু মানুষদের ও অত্র উপজেলাবাসির সার্বিক নিরাপত্তার জন্য নিয়েজিত রয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের একদল তরুণ পুলিশ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত করিমগঞ্জ থানা পুলিশ।

অন্যান্য. . . .

জলাবদ্ধতা সমস্যা নিয়ে অ্যাপের মাধ্যমে করা যাবে অভিযোগ

জলাবদ্ধতা সমস্যা নিয়ে অ্যাপের মাধ্যমে করা যাবে অভিযোগ

চট্টগ্রাম স্টেশনে বেড়েছে টিকিট প্রত্যাশীদের ভিড়

error: কপি না করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।